মাঠ দেখে খুশি মোদী, উপচে গেল মমতার সভা 

বিজেপির শিলিগুড়ির নেতারা বারবার দাবি করছিলেন, তাঁরা শহরের লোক দিয়েই মোদীর সভার মাঠ ভরাবেন।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী ও নমিতেশ ঘোষ

শিলিগুড়ি ও দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

মোদীর সভা: কলকাতায় বিজেপির ব্রিগেডে ভিড় ছাউনির বাইরেও। ছবি: রণজিৎ নন্দী

এক দিকে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির মাঠ। অন্য দিকে দিনহাটা। কাওয়াখালির বড় মাঠ এ দিন প্রত্যাশা মতোই ভরিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গের সব জেলা তো বটেই, বিহার থেকেও লোক এসেছিল নরেন্দ্র মোদীর সভায়, বলছে পুলিশেরই সূত্র।

Advertisement

অন্য দিকে দিনহাটার মাঠে লোক ধরে তুলনায় অনেক কম। পঞ্চাশ হাজার। মাত্র দু’দিনের নোটিসে সে মাঠ ভরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। মাঠ উপচে মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশে। পুলিশের হিসেব মতো তা ষাট হাজারের কম নয়।

বিজেপির শিলিগুড়ির নেতারা বারবার দাবি করছিলেন, তাঁরা শহরের লোক দিয়েই মোদীর সভার মাঠ ভরাবেন। কিন্তু আদতে কাওয়াখালির সভাকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গের সব জেলায় কর্মিসভা হয়েছে গত দশ দিন ধরে। সভার কথা ঘোষণার পরে তা ভরাতে পূর্ণ শক্তিতে মাঠে নেমেছিল বিজেপি। বিজেপি ছাড়াও বিমলপন্থী মোর্চা, জিএনএলএফ, অনন্তপন্থী গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা, কর্মীরাও এ দিন মাঠ ভরাতে উপস্থিত ছিলেন। দিন দশেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সভায় দু’লক্ষের কাছাকাছি লোক হয়েছিল। অন্য দিকে, মাত্র দুই দিনের প্রস্তুতিতে দিনহাটায় মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল সংহতি ময়দান ভড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলও। দিনহাটা-১, দিনহাটা-২ এবং সিতাই— মূলত এই তিন ব্লক থেকেই তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সংহতি ময়দানে প্রায় ৫০ হাজার লোক ধরে। তবে এদিনের উপচে পরা ভিড়ে প্রায় ৬০ হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পাহাড় থেকে প্রচুর মানুষ এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দেন। বাঁশ দিয়ে ঘেরা সভাস্থল ভর্তি হয়ে যাওয়ার পর মহানন্দা নদীর বাঁধের উপরও ভিড় জমে যায়। প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে সভাস্থল সংলগ্ন মহানন্দা সেতু ও এশিয়ান হাইওয়ে-২ র উপরও সারি দিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন উৎসাহীরা। প্রধানমন্ত্রী তখনও এসে পৌছাননি। মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। হঠাৎ সভাস্থলের একদিকে চেয়ার নিয়ে টানাটানি শুরু করেন একদল বিজেপি কর্মী। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। কর্মীদের শান্ত হতে ঘন ঘন মাইকে ঘোষণা করেন রূপা। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠে হাত নাড়তেই চারিদিকে মোদী, মোদী চিৎকার শুরু হয়ে যায়। উৎসাহী জনতার চিৎকারে দুবার ভাষণ থামান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘এত ভালবাসা বাংলা আমাকে দিয়েছে, আমি মাথা নত করে প্রণাম করছি। আপনাদের ভালোবাসা দিদির ঘুম কেরে নেবে।’’ ভাষণের শুরুতে শেষে ও মাঝে একাধিকবার ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দেন মোদী।

মোদীর সভার দিনেই দিনহাটায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় জনজোয়ার। বুধবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

উল্টো দিকে দিনহাটায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা নিয়েও উৎসাহ কিছু কম ছিল না, বলছেন এলাকার মানুষই। দিনহাটার ভেটাগুড়িতেই বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি। সেখানে মাঠ ভরিয়ে উপচে পড়া ভিড় দেখে অস্বস্তিতে জেলার বিজেপি নেতারাও। মুখ্যমন্ত্রীকে একবার দেখতে দিনহাটা সংহতি ময়দানের আশেপাশের বাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ছাদগুলিতেও এদিন উৎসাহী জনতার ভিড় দেখা যায়। ময়দানের পাশে থাকা কাছারি, আশে পাশের রাস্তা সব জায়গাতেই ভীড় থিক থিক করছিল। থানা দিঘির মাঠে বসেও অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শোনেন। দলীয় নেতা, কর্মীদের উজ্জীবিত করতে মমতাও এদিন মঞ্চে ‘বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ’ বলে স্লোগান দেন। সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় দর্শকও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন