ভোট পর্বে নগদের চেয়েও মাদক উদ্ধার বেশি টাকার

সোনা-রুপোর মতো ধাতু বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে ৭০৮.৬৯ কোটি টাকার মূল্যবান ধাতু উদ্ধার হয়েছে ভোট পর্বে।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

সোনা বা অন্যান্য মূল্যবান ধাতু অনেক পিছনে পড়ে গিয়েছে। ভোট পর্বে অন্য সব কিছুকে পিছনে ফেলে বাজেয়াপ্ত সামগ্রীর তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করছে মাদক। কাছাকাছি আছে নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি। রয়েছে মদ এবং অন্য সামগ্রীও। সব মিলিয়ে ভোট পর্বে এ-পর্যন্ত তিন হাজার কোটিরও বেশি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

Advertisement

ভোট ঘোষণা হয় গত ১০ মার্চ। তার পর থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত তালিকা অনুযায়ী ১,১৭০.৩৯ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছে। শীর্ষে গুজরাত। সেখানে ৫২৪.৩৪ কোটির টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ৩৫২.৬৯ কোটি মাদক উদ্ধার করে দিল্লি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। মাদক নিয়ে পঞ্জাবের কুখ্যাতি আছে। ভোট পর্বে সেখানে ১৬৯.৬৩ কোটি টাকা মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

সোনা-রুপোর মতো ধাতু বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে ৭০৮.৬৯ কোটি টাকার মূল্যবান ধাতু উদ্ধার হয়েছে ভোট পর্বে। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী উত্তরপ্রদেশ রয়েছে কয়েক যোজন পিছনে। সেখানে ৭১.৫৭ কোটি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯৪০.৩১৮ কোটি টাকার ধাতু উদ্ধার হয়েছে। ধাতুর মতোই নগদের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে নগদ ২১৪.৭৬ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। দক্ষিণেরই রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১৩৭.২৭ কোটি টাকা। লাগোয়া তেলঙ্গানা আছে তৃতীয় স্থানে, সেখানে থেকে ৬৮.৮২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৭৩১.৯৫ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার হয়েছে। বিপুল নগদ উদ্ধারের জেরে দ্বিতীয় দফায় ভোটের কথা থাকলেও তামিলনাড়ুর ভেলোরে তা বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এই তিনটি ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচের মধ্যে তালিকায় না-থাকলেও মদ বাজেয়াপ্তের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের নাম রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পঞ্চম স্থানে থাকা পশ্চিমবঙ্গে উদ্ধার করা মদের অর্থমূল্য ১৫.৮১ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ রাজ্যে নগদ ৩৪.৫১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

মদ উদ্ধারে প্রথমেই রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ। সেখানে ৪১.৭৮ কোটি টাকার মদ আটক করা হয়েছে। ৩৭.৮৪ কোটি টাকার মদ মিলেছে কর্নাটকে, তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ।

মাদক, ধাতু, নগদ, মদ এবং অন্য সামগ্রী— এই পাঁচটি ক্ষেত্র মিলিয়ে এ-পর্যন্ত ৩,১২৬.০৯ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানাচ্ছে এডিআরের সূত্র। পশ্চিমবঙ্গে আটক মদ বা নগদ অর্থের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই বলে মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতরে জমা পড়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভোটের সময় এই ধরনের সামগ্রী বা নগদ অর্থ উদ্ধারের পরে রিপোর্ট জমা পড়ে নির্বাচন কমিশনে। বাজেয়াপ্ত করার পরে দু’ভাবে বিষয়টি দেখা হয়। প্রথমত, উদ্ধার হওয়া নগদ বা সামগ্রী কিংবা মদের ব্যবহার নির্বাচনে হচ্ছিল কি না! দ্বিতীয়ত, বাজেয়াপ্ত করার পরে সব কিছুর যদি নথিপত্র ঠিক থাকে, কমিশনের তরফে তা ছেড়েও দেওয়া হয়। পরবর্তী কালে বিষয়টি আয়কর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতর খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে থাকে।

অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি ভোটের সম্পর্ক না-থাকলেও বিপুল পরিমাণ সামগ্রী বা টাকা উদ্ধারের ঘটনা নির্বাচনকে কতটা প্রভাবিত করল, তা আরও কিছু দিন পরে বোঝা যাবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন