প্রতীকী ছবি।
কেউ ঘন ঘন মোবাইল ঘাঁটছেন। কেউ বার বার খাতা–কলম নিয়ে বসছেন। কেউ আবার ফোনে নানাজনের মতামত শুনছেন। প্রিয়জনরাও মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে বসছেন, “ফল ভাল হবে তো?” শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লে একটু বেরিয়ে পড়ছেন তাঁরা। এ ভাবেই ফলের অপেক্ষায় দিন গুনছেন কোচবিহারের চার পরীক্ষার্থী।
না, এঁরা কেউ মাধ্যমিক বা উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা দেননি। তাঁরা দিয়েছেন, ভোট-পরীক্ষা। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার ঠিক একদিন পরেই ভোটের ফল ঘোষণা হবে। মাধ্যমিকের ফল হবে ২১ মে। ভোটের ফল ২৩ মে। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ২৭ মে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের মতোই রক্তচাপ বাড়ছে ভোট-পরীক্ষার্থীদের। মুখে অবশ্য সবাই বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের কারও কোনও টেনশন নেই।
‘পরীক্ষার্থী’দের যখন এই যখন অবস্থা, তখন চাপানউতোর চলছে দলে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বুধবার ফেসবুকে লিখেছেন, কোচবিহার লোকসভা আসন থেকে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী দু’লক্ষ ভোটে জয়ী হবেন। তা নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য চলেছে। দলীয় সূত্রের খবর, পরেশ অধিকারী টেনশন কমাতে এলাকায় এলাকায় ঘুরে পার্টি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি পারিবারিক কিছু কাজও সামলে নিচ্ছেন। আজ, বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ রয়েছে কোচবিহারে। সেখানে যোগ দেবেন পরেশ। তিনি বলেন, “টেনশনের বিষয় নেই। অপেক্ষায় আছি। এটা ঠিক।” বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক ভোটের প্রচারে সময় কাটাচ্ছেন। এ দিন তিনি ছিলেন কলকাতায়। তাঁর কথায়, “পরীক্ষার ফলের জন্যে সবাই অপেক্ষা করছে। এ টুকু বলতে মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। তাই জয় নিশ্চিত। ওইদিন শুধু ফল জানা যাবে।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূল সভাপতি ভোটের আগে বলেছিলেন পাঁচ লক্ষ ভোটে জিতবেন, এখন বলছেন দু’লক্ষ ভোটে। ফলে তাঁরা যে হারবেন, তা বুঝতে পারছেন।” কোচবিহার লোকসভা আসনের বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায় বাড়িতেই রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার কোনও টেনশন নই। আমরা যে পরীক্ষা দিয়েছি তাঁর ফলাফল জনগণের হাতে। তা ইভিএম বন্দি হয়েছে। তাই নতুন করে টেনশনের কিছু নেই।” কংগ্রেস প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরীও ভাল ফলের আশা করছেন। তাঁর স্বামী কংগ্রেস নেতা বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “শুধু কোচবিহার নয়, গোটা রাজ্য ও দেশেও আমাদের ভাল ফল হবে। বিজেপি সব জায়গায় হারবে।”
ভোট-পরীক্ষার ফল জানাতে প্রশাসনের তরফেও সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে ওই বিষয়ে আলোচনা করবেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক কৌশিক সাহা বলেন, “ওই বিষয়ে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”