ভোটে বাহিনী নিয়োগের ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি হোমগার্ডদের কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে।
লোকসভা ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহার করা হতে পারে হোমগার্ডদের। ভোট পরিচালনায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষেত্রে আপত্তি রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু, ভোটের ডিউটিতে হোমগার্ড নিয়োগের বিষয়ে তেমন কোনও বাধা নেই। ফলে লাঠিধারী এই পুলিশ কর্মীদের ভোটের সময়ে ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে ভোটের দিন গোলমাল হলে, হোমগার্ডরা কতটা কার্যকারী ভূমিকা নিতে পারবেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিরোধীরা।
কমিশন সূত্রে খবর, এ রাজ্যে একটাও ‘অতি স্পর্শকাতর’ বুথ কেন্দ্র নেই। রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে তেমনই একটি রিপোর্ট গিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে। এর পরই এ রাজ্যে বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামেরা সরব হয়েছে। বুধবার কমিশনে গিয়ে এ রাজ্যের সব বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণার আবেদন জানিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কংগ্রেসও দাবি জানিয়েছে, সব বুথে আধা সামরিক বাহিনী রাখা হোক। তাতে অবশ্য খুব একটা আমল দিতে চাইছে না শাসক দল। এ বিষয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উপনির্বাচনে কোনও গোলমাল হয়নি। তাতেও ওরা নির্লজ্জের মতো আমাদের অসম্মান করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করালেও ৪২টি আসনেই দল জিতবে।’’
ভোটে বাহিনী নিয়োগের ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি হোমগার্ডদের কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে। ভোটের সময় বাহিনী নিয়োগ নিয়ে এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সিদ্ধনাথ গুপ্তের সঙ্গে নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব সহমত হলে তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট পৌঁছবে কমিশনে। তার পরেই ঠিক হবে, আদৌ ভোটের সময় এই লাঠিধারী হোমগার্ডদের কাজে লাগানো হবে, কি না।
আরও পড়ুন, বিজেপিতে যোগ দিলেন অর্জুন সিংহ, তৃণমূল বলল গুরুত্বহীন ঘটনা
গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে নির্বাচনের কাজে লাগানো হয়েছিল হোমগার্ড, সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্য চাইছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো লোকসভা ভোট পরিচালনা করতে। আমরা তা কখনই মানব না।”
আরও পড়ুন, দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘উদ্দেশ্য যদি অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানো হয়, তা হলে এ রকম কোনও প্রস্তাব দেওয়া অবাস্তব। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বদলে হোমগার্ডদের প্রহরায় নির্বাচন করানোর প্রস্তাব যদি রাজ্য সরকার কমিশনকে দেয়, তা হলে বুঝতে হবে এর মধ্যে অভিসন্ধি রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলকে জেতানোর জন্য হোমগার্ড দিয়ে নির্বাচন করানোর প্রস্তাব দিতেই পারে। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।’’ তিনি জানান, বিজেপি নির্বাচন কমিশনের বিবেচনার উপরে আস্থা রাখছে। যদিও শাসকদলের প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের খারিজ করে দেওয়ার অধিকার রয়েছে। জয়প্রকাশের কথায়, ‘‘নির্বাচন কমিশনের বিচারবুদ্ধি বা বিবেচনার উপরে আমাদের ভরসা রয়েছে। কোনও অবাস্তব প্রস্তাব গৃহীত হবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’
(দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।)