general-election-2019-west-bengal

সত্তরে প্রথম ভোট! কেউ আবার বঞ্চিতই

কারও ভোটার কার্ডই নেই, কেউ আবার কার্ড ফেলে এসেছেন পুরনো ঠিকানায়। লতাদেবীর মতো সময়ে ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি কোলাঘাটের অন্য একটি বৃদ্ধাবাসের বাসিন্দাদেরও।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৯ ০১:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রায় খালি হাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন লতা সরকার। তাঁর ব্যবহারের প্রতিটা জিনিস কেড়ে নিয়েছিল পরিবার। সঙ্গে ভোটার কার্ডও।

Advertisement

বৃদ্ধাবাস-জীবন শুরু হওয়ার পর থেকে তাই আর ভোট দেওয়া হয়নি লতাদেবীর। কোলাঘাটের গোপালনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাইন এলাকার এক বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা ৭০ বছরের এই বৃদ্ধা এ বারই প্রথম ভোট দেবেন। বৃদ্ধা বলছেন, ‘‘এই বৃদ্ধাবাসের উদ্যোগে ভোট দেওয়ার অধিকারটা আবার ফেরত পেলাম।’’

কারও ভোটার কার্ডই নেই, কেউ আবার কার্ড ফেলে এসেছেন পুরনো ঠিকানায়। লতাদেবীর মতো সময়ে ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি কোলাঘাটের অন্য একটি বৃদ্ধাবাসের বাসিন্দাদেরও। তাই এ বারও ভোট দেওয়া হবে না সেখানকার ৩১ জন আবাসিকের। গণতন্ত্রের উৎসবে নমিতা, পদ্ম, প্রণবেশরা তাই ব্রাত্য। প্রিয়জন দূরে সরিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করা থেকেও এভাবে দূরে থাকতে হবে ভেবে, আড়ালে আঁচল দিয়ে চোখ মুছে নেন হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা নমিতা মণ্ডল। ছ’বছর আগে পরিজনরা তাঁকে বার করে দেয়। আর বাড়ি ফেরা হয়নি নমিতার। খোঁজ নেয়নি আপনজনেরাও। বাড়ি ছাড়ার সময় সঙ্গে করে কিছুই আনেননি। ভোটার কার্ডটিও না। ফলে আর ভোটও দেওয়া হয়নি নমিতার। মাস ছ’য়েক আগে পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ঘর ছেড়েছিলেন খড়্গপুরের বাসিন্দা প্রণবেশ মণ্ডল। অভিমানে আর ফেরেননি! ভোটার কার্ড সঙ্গে নেই, তাই এ বার ভোট দিতে পারবেন না তিনিও। ভোটের সময় পুরনো ঠিকানায় যেতে পারলে তো ভোটটা দেওয়া যেত! কিন্তু নিয়ে যাবে কে!

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গোপালনগরের ‘অমর সেবা সঙ্ঘ সিনিয়ার সিটিজেন হোম’-এর উদ্যোগে অবশ্য ভোটার তালিকায় নাম তোলা হয়েছে লতা-সহ ১৯জন আবাসিকের। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৃদ্ধাবাসে এসে ভোটদানের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৬৮ বছরে পারুলদেবী বলেন, ‘‘প্রথমবার ভোট দেব। খুব আনন্দ হচ্ছে!’’ বৃদ্ধাবাসের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশুতোষ পাড়ুই বলেন, ‘‘আমরাই উদ্যোগী হয়ে ১৯ জন আবাসিকের নাম ভোটার তালিকায় তুলতে পেরেছি। বৃদ্ধাবাসের ঠিকানায় ওঁদের আধার কার্ডও বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমরা চাই সকলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন