কোতুলপুরের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলকে তিনি তোলাবাজের দলও বলেছেন। তার জবাবে এ বার তাঁকেই সবচেয়ে বড় তোলাবাজ বলে উল্লেখ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নোটবন্দি করে মোদী কত টাকা তুলেছেন সে প্রশ্নও তুললেন তিনি।
সোমবার বাঁকুড়ার কোতুলপুরে নির্বাচনী জনসভা ছিল। সেখান থেকেই নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, “শুধু অশালীন কথা বলে বেড়ান মোদী। বাংলায় এসে আমাকে তোলাবাজ বলছেন। আমি কি তাহলে দোলনায় বসিয়ে দোলাব ওঁকে? তৃণমূলের পুরো নামটাই জানেন না উনি। মন্দির, মসজিদ, গির্জার নামে ছোট করে টিএমসি বলি আমরা। তা না জেনেই আমাদের তোলাবাজ বলছেন।”
নোটবন্দি করার পর মোদীর চেয়ে বড় তোলাবাজ আর কেউ নেই বলেও মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “অচ্ছে দিন আনবেন বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন। মোদীকে ভোট দিলে বিদেশ থেকে সব কালো টাকা উদ্ধার হবে। মানুষের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ঢুকবে বলেছিল বিজেপি। কেউ টাকা পাননি। অথচ নোটবন্দি করে তিন কোটি ছেলেমেয়ের চাকরি কেড়ে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। নোটবন্দি করে কত টাকা তুলেছেন আগে তার জবাব দিন উনি।”
আরও পড়ুন: ফোন করলে ধরেন না! মমতার ‘অহঙ্কার’ নিয়ে মোদীর তোপ, পাল্টা আঙুল মমতারও
“বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে কারও অ্যাকাউন্টে টাকা থাকবে না। নরেন্দ্র মোদীরা সব খেয়ে নেবেন,”— বলেও এ দিন দাবি করেন মমতা। তাঁর দাবি, “রাফেল থেকে আপেল, কোথাও দুর্নীতি বাকি রাখেননি মোদী। তাঁর মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না।”
এ দিন তমলুকের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অহঙ্কারী বলে উল্লেখ করেন নরেন্দ্র মোদী। ফণীর প্রকোপে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ফোন করলে, মমতা তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি বলে জানান। কেন কথা বলেননি তা নিয়ে যদিও কোনও সাফাই দেননি মমতা, তবে ফণীর দাপটে রাজ্যে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাঁর সরকারই সব ক্ষতিপূরণ করবে বলে জানিয়ে দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় জয় শ্রীরাম বললে জেলে পাঠাচ্ছেন দিদি’, অভিযোগ মোদীর
ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে গদিতে বসাতে চান বলে নির্বাচনী মরসুমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিক বার অভিযোগ করেছেন মোদী। এ দিন তাঁকেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, “নির্বাচনী হলফনামায় স্ত্রীর কত টাকা, কোথায় থাকেন, তাঁর কত সম্পত্তি রয়েছে নির্বাচনী হলফনামায় তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই জানা নেই বলে দায় সারেন প্রধানমন্ত্রী। যিনি নিজের স্ত্রী-র খবর রাখেন না, তিনি দেশ সামলাবেন কীভাবে? যিনি বউকে দেখেন না তিনি দেশের চৌকিদার হবেন? চাই না, আমরা বফাদার চাই।”
খরা, বন্যা, মাওবাদী আন্দোলনের সময় কখনও টিকি দেখা যায়নি, অথচ নির্বাচনের সময় বসন্তের কোকিলের মতো মোদী বাংলায় এসে জুড়ে বসেছেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা।