বুধবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
পাহাড়ে নির্বাচনী জনসভায় বিজেপি এবং মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিংয়ের মোটর স্ট্যান্ডের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রীর তোপ, ‘‘বিজেপি পাঁচ বছরে কিছুই করেনি। এখানকার সাংসদ জেতার পর এক বারও দার্জিলিং আসেননি।’’ মোদীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি তো হয়ই নি, উল্টে বহু লোক চাকরি খুইয়েছেন।’’
অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী হওয়ায় বহু মানুষ যে বিপদে পড়েছেন, সেই কথা স্মরণ করিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘এ রাজ্যে কিছুতেই নাগরিক পঞ্জী করতে দেব না।’’ মোদীকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘আগে দিল্লি সামলান, তারপর বাংলার কথা ভাববেন।’’
দার্জিলিং কেন্দ্রে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিংহ রাই। তাঁকে সমর্থন করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠী। অন্য দিকে বিজেপি প্রার্থী করেছে রাজু বিস্তাকে। তাঁকে আবার সমর্থন করেছে মোর্চার বিমল গুরুং গোষ্ঠী। সুবাস ঘিসিংয়ের পুত্র মন ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে জিএনএলএফ-এর সমর্থনও রয়েছে বিজেপি প্রার্থীর দিকেই। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে শঙ্কর মালাকারকে। বামেদের হয়ে দাঁড়িয়েছেন সিপিএমের সমন পাঠক। দার্জিলিং কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে দ্বিতীয় দফায়, আগামী ১৮ এপ্রিল। তার সঙ্গে ওই দিন এ রাজ্যে জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জের আসনেরও ভোটগ্রহণ।
পাহাড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনাও তুঙ্গে। বৃহস্পতিবারই কালিম্পঙে সভা করেছেন অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতির সভাও প্রথমে দার্জিলিঙে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় সেই সভা হয়েছে কালিম্পঙে। কারণ আগে অনুমতি চেয়েছিল তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে এক বারও দেখা যায়নি, এখন কালিম্পঙে এসে বড় বড় কথা বলছেন।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য
• পাহাড়-সমতল একসঙ্গে থাকার জন্য বন্ধুত্ব চাই
• ওই ইভিএম-এ ভোট দিলে ‘নোটা’তে চলে যাবে
• দু’টি ইভিএম থাকবে, তাতে দু’নম্বর ইভিএম-এ ভোট দেবেন না
• আমি দার্জিলিং আসতেই থাকব, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করব
• আমরা চাই দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পংকে দেকে মানুষ বলুক, দেখুন কত সুন্দর
• কিন্তু আমরা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়বাসীর জন্য অনেক কিছু করেছি
• পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে, একটা কাজও করেন না
• সংবাদ মাধ্যম থেকে সব কিছু নিজের কুক্ষিগত করে নিয়েছেন
• কিন্তু কেউ আর মিত্র নেই, সব শত্রু হয়ে গিয়েছে ওদের
• ভোটের সময় এসে বলেন, মিত্রোঁ, ভোট দিন
• নিজের নামে শুধু প্রচার করে বেড়িয়েছেন, আর কিছুই করেননি
• মোদী নিজের নামে সিনেমা বানিয়ে নিয়েছে, নিজের নামে নমো টিভি বানিয়েছেন
• গাঁধীজি, স্বামী বিবেকানন্দের কথা এখন চলে না
• দেশের সংবিধান সঙ্কটের মুখে, স্বাধীনতা সঙ্কটের মুখে
• বাংলায় আমরাই জিতব, আপনি আগে দিল্লি সামলান, তারপর বাংলার কথা ভাববেন
• বাংলায় কখনও এনআরসি করতে দেব না
• কে থাকবে, কে যাবে, সেটা কি ওনারা ঠিক করবেন
• এনআরসি করে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে বলছে
• জওয়ান মেরে জওয়ানদের প্রতি প্রেম দেখাচ্ছে?
• পুলওয়ামায় কী হল? আপনাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য এসেছিল
• কিন্তু লোকে বলছে, চৌকিদার চোর
• এখন বলছেন চৌকিদার
• এখন কোথায় গেল সেই চাওয়ালা
• গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তবু বলেছিলেন চাওয়ালা
• বলেছিলেন, বিজেপিকে ভোট দিন, আমরা বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে আমরা আপনাদের অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেব, দিয়েছে?
• নোটবন্দি আপনাদের মনে আছে? একদিন আচমকা দেখ গেল নোট বাতিল হয়ে গিয়েছে
• কিন্তু পাঁচ বছরে চাকরি তো হয়ইনি, বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন
• মোদীজি বলেছিলেন, পাঁচ বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন
• পাহাড়ের জন্য ওরা কী করেছে
• বাগডোগরায় নেমে কালিম্পঙে এসে ভাষণ দেবে, চলে যাবে
• কালিম্পঙে এসে বড় বড় কথা বলছেন (অমিত শাহের সভার দিকে ইঙ্গিত)
• বলেছিলেন গোর্খাল্যান্ডের কথা, কিন্তু এখন পালিয়ে গিয়েছে
• বিজেপি পাঁচ বছরে কোনও কাজ করেনি
• ২০১৯ সালে দিল্লিতে তৃণমূলের নেতৃত্বেই সরকার হবে, ৪২-এ ৪২টা আসনই আমরা জিতব
• দার্জিলিংয়ের উন্নয়নে তিন দফা পরিকল্পনা হওয়া দরকার— শর্ট টার্ম, মিড টার্ম এবং লং টার্ম
• মণিপুর থেকে এক জন এসেছে, তিনি ভোটে টাকা ওড়াবেন আবার চলে যাবেন
• পাহাড়বাসীর কাছে অনুরোধ, এদের সমর্থন করবেন না, ওরা টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যায়
• বিমল গুরুংয়ের প্রভাব প্রতিপত্তি এখন শেষ হয়ে গিয়েছে
• আমি শুধু ভোটের সময় পাহাড়ে আসি না, পাহাড়ের মানুষকে আমি ভালবাসি
• ওরা চায় না, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পঙের উন্নতি হোক
• পাহাড়ে গন্ডগোলে বিজেপি দিল্লি থেকে মদত দেয়
• সেই সাংসদ দার্জিলিঙে কখনও এসেছেন? কোনও কাজ করেছে?
• বিমল গুরুং এস এস অহলুওয়ালিয়াকে জিতিয়েছিলেন
• তিন মাস অন্তর আমি দার্জিলিঙে আসি
• সব সেনা জওয়ানদের স্যালুট ও অভিনন্দন
• আমাদের যে গোর্খা সেনা রয়েছে, তাঁদের অনেকেই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন