‘ইভিএমে কারচুপি করে ২৩-২৪টি আসন দখলের ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি!’, আশঙ্কা প্রকাশ মমতার

লোকসভা ভোটে ইভিএমে কারচুপি করে রাজ্যে বিজেপি ২৩-২৪টি আসন পেতে চাইছে বলে সোমবার তৃণমূলের কর্মিসভায় আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

নজরুল মঞ্চের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ইভিএমে কারচুপি করে লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপি ২২-২৩টি আসন পেতে চাইছে বলে সোমবার তৃণমূলের কর্মীয় সভায় আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রাজ্যে ৪২ টি লোকসভা আসনের ৪২ টিতেই জয়ের ডাক দিয়ে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টোদিকে বিজেপিও এ রাজ্যে দলের লক্ষ্য হিসাবে বারবারই ২২-২৩ টি আসনের কথা বলেছে। এদিনই এবিপি নিউজ-এ বাংলায় রাজনৈতিক পরিবর্তন হবে বলে দাবি করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ রাজ্যে বিজেপির লক্ষ্য হিসাবে ২৩ টি আসনের কথা বলেছেন। এই অবস্থায় মমতার এদিনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত এই সভায় মমতা বলেন, ‘‘ইভিএমে কারচুপি করবে। বাংলায় এটা করার চেষ্টা চলছে। তাই বলছে, ২৩-২৪টা আসন পাবে।’’ তবে এ সব ঠেকাতে তৃণমূল যে সতর্ক তা বুঝিয়েই তিনি বলেন, ‘‘ভাল করে করাব।’’ কারচুপির এই অভিযোগ মানতে চাননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ভোটে কারচুপির অভ্যাস আছে ওঁর-ই। তাই উনি এই ভয় পাচ্ছেন।’’

ইভিএম নিয়ে এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে এদিন দলের তরফে সতর্কতার কথাও উল্লেখ করেন তৃণমূলনেত্রী। দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ইভিএম এবং ভি-প্যাড সম্পর্কে জানেন, তাঁদেরই দলের তরফে বুথে পাঠাবেন।’’ আর যাঁরা জানেন না, তাঁদের জন্য তিনি আলাদা প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছেন সৌগত রায়, দীনেশ ত্রিবেদী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দলের নীচেরতলার নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেবেন তাঁরা। দলনেত্রীর এই বক্তব্যের পরে কিছুটা গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্যে ৪২ টি আসন পাওয়া নিয়ে দলের কোনও স্তরেই কোনও সংশয় নেই। ইভিএম নিয়ে বিজেপি যে অপচেষ্টা করতে পারে, নেত্রী সে সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন।’’ এদিনও নিজের লক্ষ্য জানিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘৪২টি আসনের ৪২ টি জয়ের বিষয়টি কথার কথা নয়। সে জন্য পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।’’

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা সম্বন্ধে কতটা জানেন?

দলের প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে মমতা জানিয়ে দেন, ‘‘যাঁরা ভাল কাজ করেছেন, তাঁরা থাকবেন। দু’একজনের সমস্যা আছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তবে দল যাঁকে প্রার্থী করবে, তাঁর হয়েই নির্বাচন করতে হবে।’’ বিজেপি টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলকে ভাঙার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘লাখ লাখ টাকার লোভ দেখাবে, বাইক কিনে দেবে, গাড়ি কিনে দিতে চাইবে। লড়াইটা হবে তো?’’ মালদহ, মুরর্শিদাবাদ ও রায়গঞ্জের ৬টি আসন তৃণমূল পাবে বলে সভায় দাবি করেন সংশ্লিষ্ট জেলার ভারপ্রাপ্ত নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

লোকসভা ভোটে দলকে পূর্ণশক্তিতে মাঠে নামাতে মমতা এদিন বলেন, ‘‘রাজ্যে কংগ্রেস ও সিপিএমকে প্রতিপক্ষ হিসাবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য কংগ্রেস, সিপিএম কী করে দেখার দরকার নেই। পঞ্চায়েতে দেখেছি।’’ তারপরই চেনা ঢঙেই উপস্থিত নেতাদের তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এটা করতে না পারলে কীসের তৃণমূল?’’ দলকে চাঙ্গা করতে তিনি বলেন, ‘‘৩৪ বছর লড়াই করে সিপিএমকে যদি সরাতে পারি, তাহলে পাঁচ বছরের মোদী নামের স্বৈরাচারীকেও সরাবই সরাব। আগের মতো জেগে উঠুন তো।’’ মমতার এই দাবিকে খোঁচা দিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘আগে বাংলা সামলান, তারপর দিল্লির কথা ভাববেন।’’ রাজ্যের বাইরেও কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন