মমতাই প্রার্থী, বলছেন পরেশ

এক দিকে জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, অন্য দিকে পরেশবাবু কয়েক মাস আগেই বাম দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন— এই দুই কাঁটাতেই বিরোধীরা তাঁকে বিঁধতে চাইছে। তা বুঝতে পেরে প্রথম দিন অত্যন্ত সাবধানী পরেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৮:১৯
Share:

স্বাগত: কোচবিহার ফেরার পরে দলের প্রার্থী পরেশ অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

তিনি নন, প্রার্থী আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— শুক্রবার কোচবিহার জেলা শহরে পৌঁছে এমনই বার্তা দিলেন কোচবিহার লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী। তিনি দাবি করলেন, এ বার রেকর্ড ভোটে জয়ী হবে তৃণমূল। পরেশের কথায়, “পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে দেখেই মানুষ ভোট দেবেন। কোচবিহারও আলাদা কিছু নয়।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা উন্নয়নের কথা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরব।”

Advertisement

এক দিকে জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, অন্য দিকে পরেশবাবু কয়েক মাস আগেই বাম দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন— এই দুই কাঁটাতেই বিরোধীরা তাঁকে বিঁধতে চাইছে। তা বুঝতে পেরে প্রথম দিন অত্যন্ত সাবধানী পরেশ। সেই সঙ্গে দলের নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিয়েই তিনি যে চলবেন, তাও বুঝিয়ে দেন। এমনকি বিদায়ী সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গেও তিনি যে প্রচারে যাবেন সে কথাও স্পষ্ট করে দেন। পরেশ বলেন, “তৃণমূল যাঁরা করেন, যাঁরা মমতাকে ভালবাসেন, তাঁরা তৃণমূলের প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। এখানে দ্বন্দ্বের কোনও অবকাশ নেই।” পার্থর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও জানান পরেশ। তিনি বলেন, “হাতে খুব অল্প সময়। প্রথম দফায় কোচবিহারে ভোট। তাই আর বসে থাকার কোনও সুযোগ নেই। জোরকদমে প্রচার চলবে।”

যুব ও মূল তৃণমূলের দ্বন্দ্বে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোচবিহার। দলের তরুণ সাংসদ পার্থ যুব তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সম্পর্ক এই মুহূর্তে ভাল নয় বলেই দলীয় সূত্রে খবর। একসময় পার্থই রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ছিলেন। কিন্তু তিনি সাংসদ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। এই অবস্থায়, এ বারে পার্থকে টিকিট দেয়নি দল। পার্থ অবশ্য এর মধ্যেই পরেশের হয়ে প্রচার শুরু করেছেন। অন্য দিকে, পরেশ সম্প্রতি ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার পরে প্রভাব খাটিয়ে তিনি এসএসসি তালিকায় মেয়ের নাম এক নম্বরে তুলে শিক্ষিকার চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অভিযোগ ওঠে সুবিধাবাদী রাজনীতি করারও। সে সব বিতর্কের কথা মাথায় রেখেই এ দিন তিনি মমতার নাম নিয়ে প্রচারে নামলেন, বলছে দলের একটি সূত্রই।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিনই জেলায় ফেরেন পরেশ। পরে পার্টি অফিসে যান। তাঁকে স্বাগত জানাতে মোটরবাইক মিছিল নিয়ে স্টেশনে হাজির হন তৃণমূল কর্মীরা। রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ নিরঞ্জন দত্ত, খোকন নাগও স্টেশনে যান। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ, রবীন্দ্রনাথের পুত্র পঙ্কজও পরেশকে স্বাগত জানান। দলের বিরোধী গোষ্ঠীর কোনও নেতাকে এ দিন দেখা যায়নি। বিদায়ী সাংসদ জানান, তিনি কলকাতায়। ফিরে প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করবেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘প্রার্থীর প্রচারে গ্রামে ঘুরছি। তাই যেতে পারিনি। বহু মানুষ, দলের নেতা-কর্মীরা সবাই পরেশকে স্বাগত জানিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন