মুখ্যমন্ত্রী: দিনহাটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক ধরেই বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ নিয়ে চাপানউতোর চলছিল। বুধবার সিবিআইয়ের চিঠি দেখিয়ে কোচবিহার লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে সরব হলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিনহাটা সংহতি ময়দানের সভায় ওই চিঠির খানিকটা পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “নারীপাচার, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসায়ীর মতো মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে চিঠিতে। এই কথা আমরা বলিনি। সিবিআই বলেছে।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলকে লুটেরা বলছেন। আপনারা কাকে টিকিট দিয়েছেন? আমরা যাকে বহিষ্কার করে দিয়েছি, তাঁকে প্রার্থী করেছেন। তার মানে আপনি অস্ত্র পাচারকারীকে টিকিট দেন, লুটেরাকে টিকিট দেন। যাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, তাঁদের টিকিট দেন।” এমনকি সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আসুন চিঠি দেখে যান।”
নিশীথ অবশ্য বলেন, ‘‘ওটা একটা জাল চিঠি। ওরকম চিঠি আমি পাইনি। ওরকম চিঠি কী করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছল, তা তিনিই বলতে পারবেন।’’ নিশীথের আরও দাবি, ‘‘আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।’’
মাস তিনেক আগে যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সম্পাদকেরই দায়িত্বে ছিলেন নিশীথ। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিজেপিতে যোগ দেন নিশীথ। এর পরেই তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে জানা যায়, নিশীথের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এর পরেই তৃণমূল নিশীথের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতি-খুনের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে প্রচারে নামে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বুধবার দিনহাটার সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী সেই একই অভিযোগ করেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূলের যিনি প্রার্থী রয়েছেন, তাঁর নামেও এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে এই প্রচার করে লাভ নেই।”
এ দিন দিনহাটার সংহতি ময়দানে সভা করে তৃণমূল। দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকে যুব তৃণমূলের নেতা থাকার সময়ে নিশীথের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই এলাকাতেই ২০০টির উপরে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন নিশীথ। ঘাসফুলের প্রার্থীদের হারিয়ে ওই এলাকায় নির্দল প্রার্থীরা অনেক আসনে জয়ী হন।
তিনি বিজেপিতে যোগদানের পরে সেই ভোটব্যাঙ্ক যাতে অটুট রাখা যায়, সে দিকে তাকিয়েই এ দিনের সভা।