Lok Sabha Election 2019

গুজরাত দাঙ্গা, গোধরা ভুলে গিয়েছ? মমতার তিরে মোদী

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর(এনসিআরবি) তথ্য উল্লেখ করে শনিবার মমতা হাওড়া, হুগলির সভায় মোদীকে বিঁধে বলেন, ‘‘ভাল করে পড়ে দেখ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তালিকায় দেখুন গুজরাত ১১ নম্বরে আর পশ্চিমবঙ্গ ১৯-এ।’’

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও নুরুল আবসার

পাণ্ডুয়া ও জয়পুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩২
Share:

পাঁচলায় মমতা। ছবি: সুব্রত জানা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের প্রাণসংশয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্য সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী পাল্টা বিজেপি শাসিত গুজরাতকে সন্ত্রাসের অন্যতম শীর্ষ রাজ্য বলে তোপ দাগলেন।

Advertisement

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর(এনসিআরবি) তথ্য উল্লেখ করে শনিবার মমতা হাওড়া, হুগলির সভায় মোদীকে বিঁধে বলেন, ‘‘ভাল করে পড়ে দেখ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তালিকায় দেখুন গুজরাত ১১ নম্বরে আর পশ্চিমবঙ্গ ১৯-এ।’’ সঙ্গে সঙ্গেই মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বে ২০০২ সালে গুজরাতের দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এত বড় মিথ্যা কথা! এখানে নাকি ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় বেরোতে পারে না! গুজরাতের দাঙ্গার কথা, গোধরা ভুলে গিয়েছ?’’

পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে এ রাজ্যে বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর কয়েকটি ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সব হত্যার প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার মোদী বলেছিলেন, ‘‘বাংলার বিজেপি কর্মীরা সকালে কাজে বেরনোর আগে মাকে বলে যান, দলের কাজে যাচ্ছি। যদি সন্ধ্যাবেলা বেঁচে না ফিরি, তা হলে কাল থেকে ছোট ভাইকে পাঠিও।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেছেন বলে তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব শুক্রবারই প্রতিবাদ জানান। এ দিন মমতা আক্রমণের সুর চড়িয়ে বলেন, ‘‘এরা সব গর্ধশক্তি। দাঙ্গাবৃত্তিই এদের কাজ। কুৎসিত ভাষা আর উস্কানিমূলক ঈর্ষা ছড়ানোই ওদের কাজ।’’ এর পরেই বিজেপিকে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কয়েকটি দলের এক হাতে ডান্ডা, অন্য হাতে নিয়েছে গুন্ডা। আর টাকা হাতে পান্ডা।’’

বাংলার গ্রামে বিজেপি কর্মীকে গলায় দড়ি দিয়ে গাছে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মোদী মন্তব্য করেছিলেন। এর জবাবে মমতা প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকেই ভোটারদের কাছে রাজ্যের প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে চাইলেন। মোদীকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দিয়ে মমতা পাল্টা বললেন, ‘‘সব ক’টা সুইসাইড কেস। অথচ মরে গেলে বলে খুন হয়েছে। ওই জেলায় ৮১ জন গলায় দড়ি দিয়ে মারা গিয়েছেন। আমরা এ সব কেউ চাই কি? মৃত্যু হয়েছে। কী করব!’’ আত্মহত্যা অপরাধ বলে মন্তব্য করে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘‘আত্মহত্যা একটা অপরাধ। আমরা এ সব কেউ চাই না। বাড়ির লোকও চায় না। কিন্তু অনেক সময় এক একটা ঘটনা ঘটে যায়। কী করব?’’

তাঁর দলের প্রাক্তন সাংসদ সুলতান আহমেদের মৃত্যুর নেপথ্যে বিজেপির ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপি, মোদী মানসিক নির্যাতন করেছিল সুলতানকে। উনি সহ্য করতে পারেননি।’’ নারদ-কাণ্ডের ভিডিওতে সুলতানকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। তা নিয়ে জেরাও শুরু হয়েছিল। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সুলতানের মৃত্যু হয়। সেই মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘স্বাভাবিক মৃত্যুও আসলে অস্বাভাবিক। স্বাভাবিক ভাবে দেখানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন