মচকে গেল মিমির হাত

সকাল থেকে সেলফি, ঢাক আর গ্ল্যামারে ভালই শুরু হয়েছিল মিমির প্রচার। দলের নজরে ছিল শিলিগুড়ির তৃণমূল বিরোধী বাঙালি ভোট।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১০
Share:

প্রচারে: রোড-শোতে বেরিয়ে হাতে চোট পেলেন মিমি চক্রবর্তী। সঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ফ্যান আর সমর্থকদের বাড়তি হুড়োহুড়িতেই শেষ প্রচারে বাধল বিপদ। শিলিগুড়ির রোড শোয়ে বেরিয়ে মঙ্গলবার হাতে চোট পেলেন তৃণমূলের তারকা মিমি। এক সঙ্গে অনেকে তাঁর হাত ধরতে গেলে, হাতে টান পড়ে মিমির। যদিও তার চোট মারাত্মক নয় বলেই জানাচ্ছে আত্মীয়েরা এবং মন্ত্রী তথা দলে মিমির দাদা বলে পরিচিত নেতা অরূপ বিশ্বাস। মিমি চোট পেলে প্রাথমিক সুশ্রুষায় নামেন অরূপই। চোট পাওযার পর কিছুটা প্রচার করে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে অরবিন্দপল্লিতে তাঁর মামার বাড়ি যান চলে যান মিমি। সেখান সামান্য চিকিৎসার পরে পাড়ি দেন জলপাইগুড়ির দিকে। অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘খুব একটা চোট পায়নি। তাই সেরকম কিছু হয়নি। পরে আবার ওই এলাকাগুলিতে প্রচার সেরেই বাড়ি ফিরেছে।’’

Advertisement

সকাল থেকে সেলফি, ঢাক আর গ্ল্যামারে ভালই শুরু হয়েছিল মিমির প্রচার। দলের নজরে ছিল শিলিগুড়ির তৃণমূল বিরোধী বাঙালি ভোট। শেষলগ্নের ভোট প্রচারে তাই সিপিএম এবং কংগ্রেসের জেতা ওয়ার্ডগুলিতেই মঙ্গলবার প্রচারে তুফান তুললেন মিমি। ওই এলাকায় কোনও দলেরই তারকা প্রচার সে ভাবে হয়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই স্লগ ওভারে খানিকটা এগিয়ে থাকার দাবি করছে তৃণমূল। তবে সেলফি দিয়ে ভোট হবে না বলেই দাবি করছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।

এ দিন দুই মন্ত্রী গৌতম দেব এবং অরূপ বিশ্বাসকে দু’পাশে নিয়ে অমর সিংহ রাইয়ের প্রচার করেন মিমি। তিনি বলেন, ‘‘আমি উত্তরবঙ্গের মানুষ। এটা আমার আমার জন্মস্থান। তাই অন্য এলাকায় দাঁড়ালেও সময় বের করেছি। পরিশ্রম করব বলেই দাঁড়িয়েছি। দলের উপর ভরসা রাখুন, যাতে আমরা সকলেই এগিয়ে যেতে পারি।’’ রোড শোতে হাজির ছিলেন প্রচুর মহিলা কর্মী। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপল্লি শিশু উদ্যানে বেলা নটা থেকেই দুর্গাপুজোর মতো তাসা-ঢাক বাজতে শুরু করেছিল। সেজে গুজে অপেক্ষা করছিলেন মহিলারা। মিমি এলেই মোবাইল তাক করবেন বলে। নির্ধারিত সময়ের একটু পরে এসে মিমি এসে একগাল হেসেই সমর্থকদের আগ্রহ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেন। সেলফি শিকারীদের হাত ফসকে কোনওরকমে উঠে পড়েন ফুলে সাজানো হুডখোলা জিপে। পথে অনেক বহুতলের ব্যালকনি, বারান্দা থেকে জমেছিল ভিড়। পথেও প্রচুর মানুষ তাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করেন। পাল্টা জোড়হাত করে মাথা হেলিয়ে প্রত্যুত্তর দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অরূপ বলেন, ‘‘চার দিকেই ঘাসফুল ফুটেই রয়েছে। উন্নয়নের ভিত্তিতেই ভোট চেয়েছি। আমাদের কারও সঙ্গে লড়াই নেই।’’

তবে লড়াই যে রয়েছে, তা বুঝিয়ে দেন গৌতম। গৌতমের কথায়, ‘‘সিপিএম আর কংগ্রেস যে পরস্পরের সঙ্গে একটা গোপন বোঝাপড়া করে চলেছে, সেটা মানুষ বুঝেছে। এ বার সময় হয়েছে, তা ভোটে বুঝিয়ে দেওয়ার। তাই এত ভিড়। উচ্ছ্বাস।’’

তবে মিমির এই প্রচার ভোটে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছে সিপিএম, কংগ্রেস। দার্জিলিংয়ে সিপিএম প্রার্থী সমন পাঠক বলেন, ‘‘সেলফি আর সেলিব্রিটি দিয়ে কি ভোটে জেতা যায়! শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ তারকাদের ভোট দিয়ে দেখেছে। এলাকায় পাওয়াই যায় না।’’ কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর মালাকারের কথায়, ‘‘কে মিমি? আমি তো হেমা মালিনী, মাধুরী দিক্ষিতদের চিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন