—ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর আগে বিজেপি ডাক দিয়েছিল, ‘আব কি বার, মোদী সরকার’। পাঁচ বছর পরে সিপিএম পাল্টা ডাক দিচ্ছে, ‘আব কি বার, মোদী বেরোজগার’!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর জমানায় কর্মসংস্থানের অভূতপূর্ব বেহাল দশার সরাসরি সংযোগ ঘটিয়ে লোকসভা ভোটের আগে মিউজিক ভিডিয়ো তৈরি করল সিপিএম। বেকার তরুণ প্রজন্ম থেকে নোট বাতিলের দুর্দশা, কৃষকদের সমস্যার প্রতি বিজেপি সরকারের উদাসীনতা, বিভাজনের রাজনীতি, দেশের নানা প্রান্তে পিটিয়ে মারার অসহিষ্ণুতা— সম্ভাব্য সব হাতিয়ারেই বিজেপিকে বেঁধার চেষ্টা করেছে সিপিএম। মোদীর দলের স্লোগানকে বিদ্রুপ করেই সেখানে ডাক দেওয়া হয়েছে, ‘আব কি বার, ভাজপা কা হার’।
দেওয়াল লেখা বা পাড়ায় পাড়ায় পতাকা ঘাড়ে প্রচারের সাবেক কৌশলের পাশাপাশি যুগধর্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামাজিক মাধ্যমের উপরে এখন বিশেষ নজর দিয়েছে সিপিএম। প্রতি রাজ্যেই তৈরি হয়েছে সামাজিক মাধ্যম পরিচালনার জন্য আলাদা সেল। তারা নিজেদের রাজ্যের পরিস্থিতির নিরিখে আলাদা আলাদা ভিডিয়ো এবং অডিয়ো ক্যাপসুল তৈরি করছে। বাংলায় যেমন পুরনো গণসঙ্গীতের ছাঁচ থেকে একেবারেই বাইরে গিয়ে ব্যান্ডের কায়দায় মিউজিক ভিডিয়ো তৈরি হয়েছে। সেখানে বিজেপির পাশাপাশি আক্রমণ আছে তৃণমূলের প্রতি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে তৈরি হওয়া মিউজিক ভিডিয়ো সেই সব বিষয়ের উপরেই আলো ফেলেছে, যা জাতীয় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক কালে আলোড়ন তৈরি করেছে।
তৃণমূলও ইতিমধ্যে প্রচলিত বেশ কিছু গানের সুরে প্রচার সঙ্গীত নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। তার মধ্যে ‘আগে দিল্লি সামলা, পরে ভাববি বাংলা’র মতো লাইনও আছে। তবে চূড়ান্ত হওয়ার আগে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্রের মন্তব্য, ‘‘একটু অপেক্ষা করতে হবে!’’ দুই সর্বভারতীয় দল বিজেপি ও কংগ্রেসও সামাজিক মাধ্যমে কাজে লাগানোর নানা অস্ত্র তৈরি করেছে।
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু বলছেন, ‘‘গত ৪৫ বছরের মধ্যে কর্মসংস্থানের এত করুণ হাল আগে কখনও হয়নি। এই কাজের আকালের প্রভাব এখন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাঙ্ঘাতিক। তাই এই মিউজিক ভিডিয়োয় ‘বেরোজগারে’র প্রশ্নটাকেই সামনে আনা হয়েছে। মানুষের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়েই তৈরি হয়েছে ভিডিয়োর বিষয়বস্তু।’’ প্রাথমিক ভাবে হিন্দিতেই তৈরি হয়েছে ভিডিয়ো। গানে কণ্ঠ রয়েছে দলের সঙ্গে যুক্ত ছেলেমেয়েদেরই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মহারাষ্ট্রে কৃষকদের ‘লং মার্চ’ জাতীয় রাজনীতিতে হইচই ফেলেছিল কিছু দিন আগে। স্বভাবতই কৃষকদের সেই আন্দোলনের বেশ খানিকটা অংশ নির্বাচনের ভিডিয়োয় তুলে এনেছে সিপিএম। আবার ভাঙা সংগঠন এবং ভোটবাক্সে লাগাতার রক্তক্ষরণের মধ্যেও বাংলায় গত ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশে উপচে পড়া ভিড় বামেদের অক্সিজেন দিয়েছিল। সেই সমাবেশের ভিড়ের ক্লিপিং-ও ব্যবহার করা হয়েছে। কর্নাটকে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ বা উত্তরপ্রদেশে নিহত মহম্মদ আখলাকেরাও রয়েছেন ভিডিয়োয়।