প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
ঝাঁ ঝাঁ রোদে মানুষ বসে। তিনি এলেন নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পরে। ততক্ষণে মঞ্চের সামনে তাহেরপুর পুরসভার মাঠ কানায় কানায় ভরা। সভার সামনে থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা সভামুখী গাড়ির ভিড়ে বেসামাল।
ভরা মাঠ দেখে মঞ্চে উঠেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ‘‘কল্পনা করতে পারছি না! গতকালের সমাবেশ বড় না আজকের সমাবেশ বড়, তার যেন প্রতিযোগিতা চলছে! এত ভিড় ছিল যে হেলিপ্যাডে নেমে আমাকে এক প্রকার রোড শো করতে করতে আসতে হল! দিল্লিতে বসে এত বড় সমাবেশ কি কেউ কল্পনা করতে পারে? এই ভিড় দেখে বাংলার হৃৎস্পন্দন টের পাওয়া যাচ্ছে।’’
বুধবার রানাঘাটের আগে ইলামবাজারে মোদীর সভাতেও থিকথিকে মাথার ভিড়। পরপর তাঁর সমাবেশে জনসমাগম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাকে প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছনে ফেলে দিচ্ছে বলে এ দিন সকালেই টুইটে দাবি করেছিলেন মোদী। টুইটে লিখেছিলেন, ‘বোলপুর এবং রানাঘাটে সভা করব। ওই জায়গায় বিজেপি বাড়ছে এবং তৃণমূলের সভাগুলো সুপার ফ্লপ!’’
মাস আড়াই আগে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে তাঁর সভায় বিপুল ভিড়ে বিপদ ঘটে যাওয়ার ভয়ে তাঁকে তড়িঘড়ি বক্তৃতা শেষ করতে হয়েছিল, তাও এ দিন বাংলাকে স্মরণ করিয়ে দেন মোদী। ভিড় দেখে উৎসাহিত মোদী এ দিন বলেন, ‘‘বাংলার হৃৎস্পন্দনের আঁচ দিদিও পেয়েছেন। তিনি গুন্ডাদের জোরে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এ বারে আর তাঁর বাঁচা শুধু মুশকিলই নয়, অসম্ভব। কারণ, শুধু মোদী নন, বাংলার জনতাও দিদির বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে।’’
গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন সময়ে সারদা, নারদ-কাণ্ড এবং রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে যুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি বারবার দিয়েছেন মোদী। এ দিনও তারই পুনরাবৃত্তি করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে মোদী অভিযোগ করেন, ‘‘রাজনীতিতে পাল্টিবাজ দিদির মতো আর কেউ নেই!’’ এই অভিযোগের সমর্থনে তাঁর ব্যাখ্যা, ২০০৯ সালে মমতা রাষ্ট্রপতি শাসন এবং সেনার নেতৃ্ত্বে ভোট চেয়েছিলেন। অথচ, এখন তিনি নির্বাচন কমিশনেরর বিরুদ্ধে সরব। এক কালে মমতা অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সংসদে কথা বলতে হতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। আর সেই মমতাই এখন ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করছেন।