শালতোড়ার লক্ষ্মণপুর মোড়ে তৃণমূল প্রার্থীর গাড়ির সামনে মহিলারা। —নিজস্ব চিত্র।
চলছে তৃণমূলের ‘রোড শো’। হুডখোলা জিপে সওয়ার শাসকদলের বাঁকুড়া আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় রয়েছেন খোশ মেজাজে।
শালতোড়ার লক্ষ্মণপুর মোড়ে গাড়ি ঢুকতেই তাল কাটল। তৃণমূলের ঝাণ্ডা হাতে নিয়েই জিপের পথের সামনে তৃণমূলের পতাকা হাতে চলে আসেন কয়েক জন মহিলা। অতঃপর সমবেত চিৎকারে সুব্রতবাবুর সামনে উগরে দিলেন ক্ষোভ। জানালেন— ‘‘এলাকায় জলের সঙ্কট চলছে।’’
তারপর হাত নেড়ে সুব্রতবাবু সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় পথ থেকে সরলেন মহিলারা। মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় অস্বস্তির পরিবেশ শাসকদলের অন্দরে।
‘রোড শো’য়ে বেরিয়ে বর্ষীয়ান সুব্রতবাবুকে যে কার্যত বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে, তার কোনও আগাম ইঙ্গিত ছিল না তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের কাছে। তাই তাঁরা ঘটনাটির নেপথ্যে ‘চক্রান্তের গন্ধ’ পেয়েছেন। বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুব্রতবাবু (ঘটনাচক্রে দীর্ঘ দিন যাবৎ যাঁর হাতেই ছিল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর) অবশ্য ঘটনাটিকে সে ভাবে গুরুত্ব দিতে রাজি ছিলেন না। ছোটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই মহিলারা আমাদের দলেরই কর্মী। ওনারা আমার কাছে ‘আবদার’ করেছেন এলাকার কল সারিয়ে দেওয়ার জন্য।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিনের ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের নতুন অস্ত্র পেয়েছে বিজেপি এবং সিপিএম। বাঁকুড়া আসনের সিপিএম প্রার্থী অমিয় পাত্রের দাবি বলেন, “উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করে বলা তৃণমূলের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রকৃত উন্নয়ন কতটা হয়েছে, বাস্তবের মাটিতে পা ফেলে তা টের পাচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা।”
ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের দাবি, “সুব্রতবাবু সব জায়গায় দাবি করছেন বাঁকুড়াকে উনি জলে ভরিয়ে দিয়েছেন। এ দিন ওঁর দলেরই কর্মীরা হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন।”
বিরোধীদের তীর্যক মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সুব্রতবাবু। তাঁর দৈবি, “আমাদের সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনও দূরত্ব নেই। তাই মানুষ আমাদের কাছে নিজেদের সমস্যা তুলে ধরেন। কিন্তু দীর্ঘ ৩৪ বছরে বামফ্রন্টের কোনও মন্ত্রীর আশপাশেও ঘেঁষতে পারতেন না সাধারণ মানুষ।” একই মত শালতোড়ার তৃণমূল নেতৃত্বেরও।