আমতলায় দেব। নিজস্ব চিত্র
দীপক অধিকারী। তিনি দেব। তিনি ‘পাগলু’।
তিনিই ‘স্টার’!
সেই তারার আসমান থেকে জমিতে নামতে একটু সময় তো লাগবেই!
—তাই বলে সাড়ে চার ঘণ্টা?
—আহা, হেলিকপ্টারে আসছে যে!
—তা হলে তো সময়েই এসে পড়ার কথা। এই রোদে-গরমে...
—ওই জন্যই তো বাপু তোমাদের জন্য ছায়াঘেরা আমবাগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কিন্তু নওদার তৃণমূল নেতৃত্বের এ সব যুক্তি শুনতে নারাজ লোকজন। তাঁরা ঝাঁঝিয়ে উঠছেন, ‘‘স্নান-খাওয়া না সেরেই সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। মোবাইলের চার্জও ফুরিয়ে গেল। সত্যিই দেব আসবে তো?’’
এ বার মঞ্চে উঠে খেই ধরলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেন মধু, ‘‘আমিও প্রায় পাঁচ ঘণ্টা এখানে আছি। আপনারা তো তবু ছায়ায় বসে আছেন। কথা দিচ্ছি দেব আসবেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বার আমতলা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক হুমায়ুন কবীরকে মঞ্চে তোলা হল। যদি মাস্টারমশাইকে দেখে লোকজন শান্ত হয়! তিনি দু’টি মজার গল্পও বললেন। কিছু সময়ের জন্য দর্শকেরা চুপও থাকলেন। ফের শুরু হল চিৎকার। ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ার জোগাড়। পুলিশ কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দিল।
বৃহস্পতিবার নওদার আমতলায় দেবের আসার কথা ছিল দুপুর ১২টায়। অথচ তিনি এলেন বিকেল ৪টে ২০তে। এর আগে ডোমকলেও দেব-দর্শনের জন্য রোদে-গরমে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়েছে লোকজনকে। কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েন। সেটা মাথায় রেখেই এ দিন দেবের সভার আয়োজন করা হয়েছিল আমবাগানের ছায়ায়।
অবশেষে শোনা যায় কপ্টারের শব্দ। মাইকে ঘোষণা হতে থাকে, ‘ওয়েলকাম দেব।’ লোকজন তখন দৌড়তে শুরু করেছে। ধাক্কাধাক্কি, ছবি তোলার ধুম, ‘পাগলু...পাগলু’ চিৎকারে সে এক হইহই কাণ্ড!
মঞ্চে উঠে দেব করজোড়ে বললেন, ‘‘দেরির জন্য খুব দুঃখিত। ২৯ তারিখে বহরমপুরে ভোট। অপূর্ব সরকারকে আপনারা ভোট দেবেন। ঘাটালে ভোট ১২ মে। আমাকেও আর্শীবাদ করবেন।’’
সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষার পরে পাঁচ মিনিটের দর্শন! প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল, দেবযানী বিশ্বাস, ঊর্মিলা বিবির আক্ষেপ, ‘‘পাগলুর জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করলাম! অথচ ওর সঙ্গে একটা ছবিও তুলতে পারলাম না!’’