‘গুন্ডাতন্ত্র’ বনাম ‘মানুষ’, মোদী-দিদি তরজা

শ্রীরামপুরের সভায় মোদীকে নিশানা করেন মমতা। সেখানে তাঁর মন্তব্য, ‘‘নোটবন্দি থেকে সব কিছুতে আমি প্রতিবাদ করেছি। তুমি যত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাবে আমরা তত বেশি আসনে জিতব। চ্যালেঞ্জ করছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৪২
Share:

দিদি: কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

দিদির কাছে ‘গুন্ডাতন্ত্রে’র শক্তি আছে। আমাদের শক্তি ‘গণতন্ত্রে’র— বুধবার বীরভূমের ইলামবাজারের সভায় এসে হুংকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। অন্য দিকে এ দিনই রানাঘাটের সভা থেকে মোদীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ— ‘‘ভোট পুলিশ, ফোর্স, এজেন্সি দিয়ে হয় না। মানুষের বিশ্বাসে হয়। মানুষ আমাদের সঙ্গে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নির্বাচন কমিশনও মোদীর দলের প্রচারের সুবিধা দেখে ভোটের নির্ঘণ্ট তৈরি করেছে।

Advertisement

এ দিন রাজ্যের পৃথক পৃথক জায়গায় দু’টি করে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী। ইলমাবাজারের সভায় মোদী বলেন, ‘‘দিদির কাছে যদি গুন্ডাতন্ত্রের ক্ষমতা থাকে আমাদের হাতে গণতন্ত্রের শক্তি আছে। বাংলাকে তৃণমূলের গুন্ডাগিরি থেকে মুক্তি দিয়েই ছাড়ব। ২৩ মে নির্বাচনের ফল বেরবে। সে দিন থেকেই রাজ্যে তৃণমূলের বিদায়ের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যাবে।’’ মোদীর দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা ভোট হয়েছে তাতে মমতা বুঝে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে তাঁর সূর্য ডুবতে চলেছে।’’ রানাঘাটের সভায় মোদীর আরও দাবি, ‘‘যিনি এক দিন কমিউনিস্টদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি এখন গুন্ডাদের জন্য মমতা আর জনগণএর জন্য নির্মমতা দেখাচ্ছেন।’’

শ্রীরামপুরের সভায় মোদীকে নিশানা করেন মমতা। সেখানে তাঁর মন্তব্য, ‘‘নোটবন্দি থেকে সব কিছুতে আমি প্রতিবাদ করেছি। তুমি যত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাবে আমরা তত বেশি আসনে জিতব। চ্যালেঞ্জ করছি।’’

Advertisement

এর খানিক পরেই কৃষ্ণনগরের সভায় হিসেব দেখিয়ে মমতার দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা ভোট হয়েছে তাতে বিজেপি একটি আসনও পাবে না। বাংলায় ইতিমধ্যেই যে দশ আসনে নির্বাচন হয়েছে মোদীবাবু তাতে রসগোল্লা পাবেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই নির্বাচন কমিশন বাংলায় দু’মাস ধরে ৭ দফার ভোটের ব্যবস্থা করেছে। যাতে মোদীবাবুরা সব জায়গায় সভা করতে যেতে পারেন।’’ গরমে সভা করতে হচ্ছে বলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর দাবি, ‘‘বাকি দেশে ভোট পাবে না বুঝেই জগাই-মাধাই (মোদী-অমিত শাহ) বার বার বাংলায় উড়ে উড়ে আসছেন।’’

প্রধানমন্ত্রী অবশ্য দু’টি সভাতেই নির্বাচন কমিশনকে বাংলায় ভাল কাজ করার সংশাপত্র দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাংলায় নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে ভোট করাচ্ছে। তৃণমূলের গুন্ডাদের রুখে দিচ্ছে, তা-ই কমিশনকেও গালি দিচ্ছেন মমতাদিদি।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশে মোদীর আশ্বাস, ‘‘আইন মেনে কাজ করবেন। জনতা এবং চৌকিদার আপনাদের সঙ্গে আছে।’’

কৃষ্ণনগরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দাবি করেন, বিজেপির নেতারা পশ্চিমবঙ্গকে চেনেন না। তাঁরা বাংলাকে ভালবাসেন না। সে কারণেই দু’বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ করতে দিচ্ছে না কেন্দ্র। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিষয়টি নিয়ে দু’বার বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তবু কেন্দ্র ছাড়পত্র দেয়নি।’’ শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কেবল ভোটের সময়েই মোদীবাবুদের বাংলার কথা মনে পড়ে। বন্যা, খড়া, সুখ-দুঃখে তাঁদের টিকিও দেখা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন