অসুস্থ শিশু কোলে প্রশিক্ষণে, নাকাল মা

অসুস্থ হওয়ায় মাকে ছাড়া থাকতেই চাইছে না ওই শিশু।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ১০:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটের কাজ সামলাবেন, না কি দশ মাসের অসুস্থ শিশু। বুঝে উঠতে পারছেন না শিলিগুড়ি সংলগ্ন অধিকারী কৃষ্ণকান্ত হাইস্কুলের শিক্ষিকা সাগজিনা সোরেন। দার্জিলিং লোকসভাকেন্দ্রে তাঁর প্রিজ়াইডিং অফিসারের কাজ পড়েছে। অথচ বাড়িতে ছোট বাচ্চা দেখার কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়ে শিশু কোলে নিয়েই ভোটের প্রশিক্ষণ নিতে হাজির হচ্ছেন তিনি। বাচ্চা সামলে ঠিকমতো প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন না বলে জানান তিনি। ভোট সামলানো নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন তিনি।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের মজলিসের বাসিন্দা সাগজিনা সোরেন কয়েক মাস হল সমাজবিদ্যার শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চা নিয়ে কী ভাবে আমি এসব ভাল করে শিখতে পারব, বুঝতে পারছি না। মজলিসে আমার শ্বশুরবাড়ি, সেখানেও আত্মীয়রা অসুস্থ। একই দিনে সেখানেও ভোট। ছেলেকে কার কাছে রেখে যাব।’’ অসুস্থ হওয়ায় মাকে ছাড়া থাকতেই চাইছে না ওই শিশু। এ দিকে ২৫ মার্চ ভোটের কাজে ছাড় চেয়ে আবেদন করার পরেও তার কোনও জবাব আসেনি বলে জানান শিক্ষিকা।

তবে সমস্যার কথা শুনে জেলা নির্বাচন আধিকারিক জয়সী দাশগুপ্ত অবশ্য ওই শিক্ষিকার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের ভোটকর্মী অনেক কম। আরও প্রশিক্ষণ বাকি। তবে দেখছি, ওই শিক্ষিকাকে যদি অব্যাহতি দেওয়া সম্ভব হয়।’’

Advertisement

শনিবার শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলে ছেলেকে নিয়ে প্রশিক্ষণে এসেছিলেন সাগজিনা। মাঝে ওই শিশু কান্নাকাটি জুড়ে দিলে ভোটযন্ত্রের কাজ এবং ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রায় কিছুই শিখতে পারেননি তিনি। ওই কেন্দ্রে বাকি যাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাঁরা তাঁকে কয়েকটি কাজে সাহায্য করলেও তা পর্যাপ্ত হয়নি। সাগজিনা জানান, তাঁর স্কুলের পাশেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তিনি। তাঁর স্বামীকে পরিবারের অসুস্থদের খেয়াল রাখতে হয়। তাই পরিবার থেকেও বিশেষ সাহায্য পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

এ দিনই প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন আরও এক শিক্ষিকা মন্দ্রিতা রায়চৌধুরী। তিনি মালদহের বাসিন্দা। তাঁর দাবি, শাশুড়ি ক্যানসারে আক্রান্ত। এখানে বাচ্চাকে নিয়ে তিনি আর তাঁর স্বামী থাকেন। একই দিনে তাঁদের দু’জনেরই ভোটের ডিউটি পড়ায় বাচ্চাকে কোথায় রাখবেন ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। ছাড় চেয়ে আবেদন করেছেন তিনিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন