দলের একাংশের প্রশ্ন, মেনন যদি নির্বাচনের ইনচার্জ হন, সে ক্ষেত্রে মুকুলবাবুর পদটির অর্থ কী? ছবি: পিটিআই।
এত দিন বলা হয়েছিল,রাজ্য বিজেপির নির্বাচন বিষয়ক কমিটির প্রধান মুকুল রায়। এ বার তাঁর উপর বসানো হল দলের কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে। যা নিয়ে দলের অন্দরেই গুঞ্জন, তা হলে কি রাজ্য বিজেপিতে মুকুলের ‘গুরুত্ব’ কমছে?
রাজ্য দলের একাংশের অভিযোগ, কাগজে কলমে তিনি নির্বাচন পরিচালন (ম্যানেজমেন্ট) কমিটির আহ্বায়ক হলেও রাজ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত সাংগঠনিক কাজকর্মে তাঁর উপর ‘ভরসা’ রাখতে পারছে না দিল্লি। ফলে তাঁর মাথার উপর ‘নির্বাচন ইনচার্জ’ হিসেবে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে মেননকে। সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রামলাল দলীয় বৈঠকে মুকুলবাবুর উপস্থিতিতেই এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
দলের একাংশের প্রশ্ন, মেনন যদি নির্বাচনের ইনচার্জ হন, সে ক্ষেত্রে মুকুলবাবুর পদটির অর্থ কী? তাঁদের আরও বক্তব্য, গত কয়েক মাস ধরে দলের ভিতরে নির্বাচনের প্রার্থী এবং সাংগঠনিক বিষয়ে মুকুলবাবুর সঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দ্বন্দ্বও হয়েছে একাধিকবার। যা কখনও কখনও প্রকাশ্যেও এসেছে। সে কথা মাথায় রেখেই মেননকেদিল্লি অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছে বলে দলের একটি সূত্রের দাবি।
মুকুলবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমাকে অমিত শাহ নির্বাচন পরিচালন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দিয়েছেন। একই ভাবে কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং অরবিন্দ মেননকেও দল ভোটের ইনচার্জ করেছে। এটাই দলের রীতি।’’ কিন্তু এ ভাবে দিল্লি কি তাঁর মাথায় অন্য কাউকে বসিয়ে দিল না? মুকুলবাবুর জবাব, ‘‘ভোটের সময় প্রতি রাজ্যেই বিজেপি নির্বাচন পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক এবং ভোটের ইনচার্জ নিয়োগ করে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’
দিলীপবাবুও কার্যত একই নিয়মের কথা বলেছেন। তবে দিলীপ শিবিরের একাধিক নেতার বক্তব্য, ‘‘দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মুকুলবাবু অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, যা রাজ্য দল তো নয়ই, দিল্লি দলের একাংশও ভাল চোখে দেখেনি।’’তাঁদের আরও যুক্তি, মুকুলবাবু যে নিয়মের কথা বলছেন, তাতে ভুল নেই। দল রাজ্য থেকে একজন এবং কেন্দ্র থেকে একজনকে সাধারণত নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়। কিন্তু মুকুলবাবু তো সে অর্থে রাজ্যের নেতা নন। তিনি দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। রাজ্যে তাঁর কোনও পদ নেই। ফলে তাঁর যুক্তি এ ক্ষেত্রে খাটে না।