Lok Sabha Election 2019

ছাঁচি পেঁয়াজের বদলে পকেটে রক্ষাকালীর ফুল

সিমলাপালে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি শীতল দে প্লেটে ছোলা ও চিঁড়েভাজা সাজিয়ে সুব্রতবাবুর দিকে এগিয়ে দেন।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০৩:০৮
Share:

তালড্যাংরা ব্লক পার্টি অফিসে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

গরমে প্রচারে সুবিধে হবে ভেবে সাধের ধুতি ছেড়ে পরেছিলেন পাজামা। ভোটের দিনে ফিরলেন সেই পুরনো চেহারায়। ধুতি, উপরে সাদা-সবুজে চেক কাটা পাঞ্জাবি। রবিবার ভোট শুরুর ঘণ্টা দেড়েক পরে, হোটেল থেকে ভোট দেখতে বেরোলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন স্ত্রী ছন্দবাণী।

Advertisement

গাড়িতে উঠে সটান তালড্যাংরায় তৃণমূলের ব্লক অফিসে। সেখানে খেলাধুলো করছিল কিছু ছেলেমেয়ে। তাঁদের মাথায় হাত বুলিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘তোদের বাবা-মায়েরা ভোট দিতে গিয়েছেন? বলিস, জেঠু বলেছে, সকাল সকাল ভোট দিতে। খুব রোদ।’’ দলের ব্লক স্তরের নেতা মনসারাম লায়েকের কাছে জানতে চান, ‘‘এত ইভিএম খারাপের অভিযোগ কেন উঠছে?’’ দলের কর্মীরা বুথে যাওয়ার জন্য আবদার করলে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘বুথে যাই না। বুথে গেলে দলের কর্মী, এজেন্টরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।’’

তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থী অমিয় পাত্র অবশ্য সকাল থেকেই মেজিয়া, শালতোড়া, সাঁতুড়ি, নিতুড়িয়ার বিভিন্ন বুথে ঘুরেছেন। তাঁর দাবি, যা অভিযোগ পেয়েছেন, দলের ‘কমপ্লেন সেল’-এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের আবার অভিযোগ, ‘‘ সকালে শালতোড়ার ছাতারকানালিতে গিয়েছিলাম। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা দিনভর ঘেরাও করে রেখে দিল।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সুব্রতবাবু নিজে বুথে না গেলেও কর্মীদের বুথ আঁকড়ে পড়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। সিমলাপালে দলের ব্লক অফিসে তিনি গিয়েছেন শুনে যুব তৃণমূলের কর্মীরা দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁদের ধমক দিয়ে বুথে ফেরত পাঠিয়েছেন। এক বার তাঁর কাছে এক কর্মী ফোনে অভিযোগ করেন, বিজেপির লোকেরা টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। সুব্রতবাবুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ছাড়, ও সব কথা। মন দিয়ে ভোটটা কর।’’

প্রচারের সময় রোদ থেকে বাঁচার টোটকা হিসাবে পাঞ্জাবির পকেটে রাখতেন ছাঁচি পেঁয়াজ। এ দিন অবশ্য পকেটে ছিল তাঁর মামাবাড়ি বর্ধমানের রক্ষাকালীর পুজোর ফুল। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘‘ছোটবেলায় ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। রক্ষাকালীর কাছে মানত করার পরে, সুস্থ হই।’’ জানান, সেই থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ভরসা জুগিয়েছে রক্ষাকালীর ফুল।

সিমলাপালে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি শীতল দে প্লেটে ছোলা ও চিঁড়েভাজা সাজিয়ে সুব্রতবাবুর দিকে এগিয়ে দেন। নিজে এক মুঠো তুলে নিয়ে তৃণমূল প্রার্থী প্লেট বাড়িয়ে দেন দলের কর্মীদের দিকে। বলেন, ‘‘একটা অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি যেন। সিপিএমকে যদি বা দেখা যায়, বিজেপিকে তো দেখতেই পেলাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন