গঙ্গার জল ওপারে, জেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী

কথাঞ্জলি চলছেই। সে তিনি ‘ডহরবাবু’ হোন বা ‘সাঁওতাল বিদ্রোহের অমর শহিদ বিরসা মুন্ডা’, বিধানসভায় সতীদাহ বিরোধী আইন পাশ থেকে রাকেশ রোশনের চন্দ্রযাত্রা— অভিধানে বাদ নেই কিছুই। এ বার জানা গেল, এই ভরা বর্ষায় ফরাক্কা ব্যারাজের ফাঁক গলে বেশি জল বাংলাদেশে চলে যাওয়ায় রাজ্যে গঙ্গার জলপ্রবাহ কমে গিয়েছে! তার পিছনে রয়েছে অন্তর্ঘাত!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৬
Share:

কথাঞ্জলি চলছেই। সে তিনি ‘ডহরবাবু’ হোন বা ‘সাঁওতাল বিদ্রোহের অমর শহিদ বিরসা মুন্ডা’, বিধানসভায় সতীদাহ বিরোধী আইন পাশ থেকে রাকেশ রোশনের চন্দ্রযাত্রা— অভিধানে বাদ নেই কিছুই। এ বার জানা গেল, এই ভরা বর্ষায় ফরাক্কা ব্যারাজের ফাঁক গলে বেশি জল বাংলাদেশে চলে যাওয়ায় রাজ্যে গঙ্গার জলপ্রবাহ কমে গিয়েছে! তার পিছনে রয়েছে অন্তর্ঘাত!

Advertisement

বুধবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠকে করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের দাবি, বৈঠকে আচমকাই তিনি প্রশ্ন করে বসেন, ‘‘আপনারা কেউ ফরাক্কার জল বণ্টনের কাজ দেখাশোনা করেন?’’ সেচ দফতরের এক কর্তা সটান উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘ম্যাডাম! আমরা দেখভাল করি।’’ তৎক্ষণাৎ মমতার প্রশ্ন, ‘‘তা হলে টানা তিন মাস ধরে বাংলাদেশে বেশি জল চলে যাচ্ছে কেন? আমাকে কেউ বলেননি। কিন্তু আমার কাছে খবর আছে! সিসিটিভি আছে সেখানে?’’ কথার খেই ধরে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর— ‘‘আছে ম্যাডাম! কিন্তু তা বিকল।’’ রুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সারাননি কেন? আমার মনে হয়, এর পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে।’’

যে কথা শুনে প্রায় আকাশ থেকে পড়েন ফরাক্কা ব্যারাজের কর্তারা। কেন না ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী কে কতটা জল পাবে তা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রাধীন ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। সেচ দফতরের তা দেখভালের প্রশ্নই ওঠে না। বিষয়টি অস্বীকার করেননি সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘জলবণ্টন ও ব্যারাজের দেখভাল রাজ্য নয়, ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষই করেন।’’

Advertisement

১৯৯৬-তে স্বাক্ষরিত ৩০ বছরের জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত নির্দিষ্ট পরিমাণে জল পায় ভারত ও বাংলাদেশ। ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার সৌমিত্রকুমার হালদার জানান, সিসিটিভি দিয়ে জল ছাড়ার পরিমাণ দেখা হয় না, তার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। তাই ব্যারাজের গেটে কোনও কালেই সিসিটিভি ছিল না। ব্যারাজের এক কর্তার কথায়, ‘‘এমন আলটপকা মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী একা দায়ী নন। প্রশাসনিক কর্তারাই ওঁকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন