কাগজে-কলমে বিধি চালু আছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সেই নিয়মবিধির তোয়াক্কা না-করেই রাতবিরেতে যথেচ্ছ মাইক বাজানো হয়। এ বার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, রাত ১০টার পরে খোলা জায়গায় মাইক বাজিয়ে কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না।
মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক সভায় এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না। এই ক্ষেত্রেও পুলিশের দায়সারা কাজকর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, অনুষ্ঠান করার জন্য আবেদন এলে পুলিশ তো এখন আবেদনপত্রের উপরে নাম-কা-ওয়াস্তে একটা সই করেই দায় সারে! আর এ-সব চলবে না। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে বলে পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শব্দের দাপটে বিশেষ করে বৃদ্ধবৃদ্ধাদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। উৎসবে তো বটেই। উৎসব না-থাকলেও তারস্বরে মাইক বাজিয়ে রাতভর হুল্লোড় চলে অনেক মহল্লায়। তাতে শুধু যে ঘুম নষ্ট বা পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, তা নয়। প্রাণহানিও ঘটছে। এ-সব চলতে পারে না বলে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন একটা নতুন যন্ত্রণা হয়েছে ডিজে (বড় সাউন্ড বক্স ব্যবহার)। ডিজে ব্যবহার করা চলবে না। যার ইচ্ছে হবে, বাড়িতে বসে দরজা-জানলা বন্ধ করে চালাক। অন্যের কেন অসুবিধা হবে?’’ তাঁর মন্তব্য, কিছু লোক মাইক বাজিয়ে আনন্দ করবে আর অন্যেরা তার জন্য ঘুমোতে পারবে না— এটা আর চলবে না। বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে রাত ১০টার পরে মাইক বাজাতে গেলে বক্স ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: জেদের জোরেই প্রথম অর্চিষ্মান
মাইক বাজানোর ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বারবার অভিযোগ করছে। সেই অভিযোগের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত পরিবেশ সচিবকে বলেন, ‘‘শব্দদূষণের বিধিগুলি কী, তা সর্বসমক্ষে জানান।’’ পরিবেশ সচিব জানান, রাত ১০টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী তার পরেই ডিজি-কে বলেন, ‘‘এই বিধি যাতে ঠিকঠাক মানা হয়, সেটা পুলিশকেই দেখতে হবে।’’
ডিজি-র প্রশ্ন, শব্দের মাত্রা কত, তা মাপার কোনও ব্যবস্থা পুলিশের হাতে নেই। কোনটা মাত্রাছাড়া শব্দ আর কোনটা নয়, পুলিশ তা মাপবে কী করে? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যারা বিধি ভাঙবে, তারাই ওই যন্ত্রের ব্যবস্থা করবে। পরিবেশ বিধিতে শব্দের মাত্রা যা রয়েছে, তা মানতেই হবে।’’