প্রতীকী ছবি।
কৃতীর কৃতিত্ব নিয়ে গিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ! মেরুকরণের রাজনীতির বাজারে নতুন বিতর্ক!
সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা বিঁধতে গিয়ে ‘জালিয়াতি’ এবং ‘চক্রান্তে’র অভিযোগে জড়াল আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবার। মাধ্যমিকে এ বার দ্বিতীয় স্থানাধিকারী ছাত্র মোজাম্মেল হকের বাবা রীতিমতো অভিযোগ দায়ের করলেন পুলিশে। তাঁর ছেলেকে সরস্বতী শিশু মন্দিরের ছাত্র বলে প্রচার চালিয়ে সঙ্ঘ নেতারা তাঁদের বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বলে অভিযোগ আব্দুল মাবুকের। সাইবার ক্রাইমের আওতায় তাঁর অভিযোগের বিচার চান তিনি।
বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র মোজাম্মেল এ বার মাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে। তার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আরএসএসের দক্ষিণবঙ্গের প্রচারক বিদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়, ‘এক দিকে যখন সাম্প্রদায়িকতার মিথ্যা তকমা দিয়ে রাজ্যের আরএসএস পরিচালিত স্কুলগুলিকে বন্ধ করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করছেন মমতা, তখনই আরএসএস পরিচালিত বাঁকুড়ার বড় কালিতলা সরস্বতী শিশু মন্দিরের ছাত্র মোজাম্মেল হক এ বারের মাধ্যমিকে দ্বিতীয় হয়ে মমতার মুখে ঝামা ঘষে দিল’! সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষতার এমন মোক্ষম হাতিয়ার পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা দ্রুত শেয়ার করতে শুরু করেন বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের বহু কর্মী। বিপত্তি বাধে তখনই।
আরও পড়ুন:এসপি-র কথাও শোনেনি পুলিশ
ঘটনা হল, মোজাম্মেল বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র। সেই স্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে সে। মোজাম্মেলের বাবা মাবুক রবিবার বলেন, ‘‘চক্রান্ত করে আমাদের ছেলের স্কুল নিয়ে এমন প্রচার করা হচ্ছে ইন্টারনেটে। বাঁকুড়া সদর থানায় আমি অভিযোগ করেছি। ওই সরস্বতী শিশু মন্দিরে গিয়ে বলেও এসেছি, কেন এমন কাজ করছেন আপনারা?’’
বিদ্যুৎবাবু নিজে অবশ্য বিতর্কের বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে সঙ্ঘ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বিদ্যুৎবাবুকে ওই পোস্টে ‘ট্যাগ’ করা হয়েছিল। তা ছাড়া, ওই ছাত্র তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশু মন্দিরেরই প়়ড়ুয়া ছিল। তাই মাধ্যমিকে তার সাফল্যে অভিনন্দন জানাতে অসুবিধা কোথায়? আর তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন গেরুয়া শিবিরের কড়া নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘বিজেপি এবং আরএসএস ভুয়ো তথ্য তৈরি করে। বিজেপি ও সঙ্ঘ মানেই জুমলা! প্রধানমন্ত্রী থেকে এ রাজ্যের সঙ্ঘ নেতা, সবাই একই পথের পথিক!’’
রাজ্য বিজেপি-রই প্রাক্তন মুখপাত্র কৃশানু মিত্রের নতুন বেসরকারি সংস্থা একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে মাধ্যমিকের কৃতীরা পরবর্তী জীবনে কতটা প্রতিষ্ঠিত হয়, তা নিয়ে। কৃতী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন কৃশানু। তাঁর মতে, ‘‘মাধ্যমিক মেধা তালিকার যত জনকে সম্ভব, গ্রিটিংস পাঠাই। এ বারও পাঠিয়েছি। মোজাম্মেলের বাবা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটা জানিয়েছেন। যত দিন না আধিকারিক ও নেতারা স্বার্থান্বেষী বেনোজলের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে প্রকৃত কর্মীদের চিহ্নিত করতে পারছেন, তত দিন চটক ও তাড়াহুড়োর মাসুল গুনতে হবে!’’