মাধ্যমিকে প্রশ্ন ছুঁতেই পারবেন না প্রধান শিক্ষকেরা!

২০১৯ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সোমবার এ কথা জানান পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

যাঁদের সামনে প্রশ্নপত্র খোলার কথা, তাঁদের বাদ দিয়ে এবং নির্দিষ্ট সময়ের আগেই একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র খুলে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল চলতি বছরেই। তা নিয়ে তোলপাড় হয় শিক্ষাজগৎ। এই অবস্থায় প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা আর যাতে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র সরাসরি ছুঁতেই না-পারেন, তার জন্য ২০১৯ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সোমবার এ কথা জানান পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

এতে প্রশ্নপত্রের তদারকি নিয়ে নিয়ে জটিলতা কতটা কাটবে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের আশঙ্কা কতটা কমবে, সময়ই সেটা বলবে। কিন্তু এই পদক্ষেপকে প্রধান শিক্ষকদের অপমান হিসেবেই দেখছেন শিক্ষকদের একাংশ। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাই স্কুলের শীর্ষ ব্যক্তি। এই ধরনের সিদ্ধান্তে তাঁদের প্রতি অনাস্থাই প্রকট বলে শিক্ষা শিবিরের একটি বড় অংশের অভিমত। শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘পর্ষদ তো নিজেদের তৈরি কমিটির উপরেই ভরসা রাখতে পারছে না।’’

পর্ষদ সূত্রের খবর, এত দিনের চালু নিয়ম হল, প্রশ্নপত্রের প্যাকেট স্কুলের স্ট্রং-রুমে পৌঁছবে। তার পরে নির্ধারিত সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও আধিকারিকদের সামনে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলবেন প্রধান শিক্ষকেরা। সেখান থেকে প্রশ্নপত্র চলে যাবে পরীক্ষা কক্ষে। সেই নিয়মটাই বদলে ফেলা হচ্ছে। কল্যাণময়বাবু এ দিন বলেন, ‘‘এ বার থানা বা ট্রেজারি থেকে পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্রের প্যাকেট সরাসরি চলে যাবে স্কুলে। প্রতিটি পরীক্ষা কক্ষের জন্য পৃথক প্যাকেট বরাদ্দ থাকবে। পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে পরীক্ষার্থীদের সামনেই।’’

Advertisement

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তে এটা স্পষ্ট যে, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরে আস্থা হারাচ্ছে পর্ষদ। শিক্ষা শিবিরের ব্যাখ্যা, এর নেপথ্যে রয়েছে ২০১৮ সালের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছিল, নির্ধারিত সময়ের আগে, অন্যদের উপস্থিতি ছাড়াই নিজের অফিসঘরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলেছিলেন তিনি। প্রধান শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক শ্রীদামচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘স্কুলে প্রধান শিক্ষকই প্রধান। আশা করব, তাঁকে বাদ দিয়ে কিছু করা হবে না। যদি তেমনটা হয়, তা হলে তাঁকে অসম্মান করা হবে।’’ শ্রীদামবাবুর বক্তব্য, কেউ পরীক্ষা না-দিলে তার প্রশ্নপত্রের কী হবে, সেটাও পর্ষদের দেখা উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন