প্রতীকী ছবি
যত কাণ্ড ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে। আর তাতেই এখন খুবই উদ্বিগ্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবার-পরিজনেরা।
ময়নাগুড়ির স্কুল সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) বিশ্বনাথ ভৌমিকের অভিযোগ অনুযায়ী, এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায় মাধ্যমিক পরীক্ষার বেশ কিছুক্ষণ আগে প্রশ্নপত্র খুলে ফেলে তার উত্তর জানিয়েছেন স্কুলেরই এক বা একাধিক এক মেধাবী ছাত্রকে। যে ছাত্রের দিকে প্রধানত অভিযোগের আঙুল, তার বাবা কিন্তু এই জাতীয় বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ৷ একটা অবাস্তব কথাকে সত্যি বলে প্রচার করা হচ্ছে৷ আমার ছেলে যে পরিশ্রম করেছে, তাতে অসৎ উপায় অবলম্বনের প্রয়োজন নেই ওর।’’
আতঙ্কটা কিন্তু ছড়িয়েছে ছাত্র ও অভিভাবক মহলে। সবে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কিন্তু ঝাড়া হাত-পা হয়ে আনন্দও করতে পারছে না ছেলেরা। স্কুলের একের ছাত্রের অভিভাবক বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যি-মিথ্যা জানি না৷ কিন্তু এখন ভয় হচ্ছে, এই অভিযোগের প্রভাব আমার ছেলে বা স্কুলের অন্য পরীক্ষার্থীদের উপরে যেন না পড়ে!’’ তাঁর ছেলের কথায়, ‘‘আমি মানতে পারছি না, প্রধান শিক্ষক এমন করেছেন৷’’ ওই স্কুলেরই আরেক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বক্তব্য, ‘‘আমার সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের তেমন যোগাযোগ নেই৷ সত্যি কী, তা-ও জানি না৷ কিন্তু ভাল করে পরীক্ষা দেওয়ার পরেও এমন একটা অভিযোগ শুনে মনে কেমন যেন ভয় হচ্ছে৷’’ ওই ছাত্রের মা-ও বলেন, ‘‘এর প্রভাব না স্কুলের উপর পড়ে!’’
অথচ এই হরিদয়ালের আমলেই ভাল ফল করতে শুরু করেছে স্কুল। উঠে এসেছে মেধা তালিকায়। ২০১১ সালে এই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোটা রাজ্যের নিরিখে তৃতীয় হয় হরিদয়ালেরই ছেলে দীপাঞ্জন। তিন বছর পরে হরিদয়াল শিক্ষারত্ন পান। ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ফের দ্বিতীয় হয় স্কুলের সঞ্জয় সরকার। পরের বছর উচ্চ মাধ্যমিকে চিন্ময় রায় চতুর্থ হয়, সুজয় মল্লিক সপ্তম। মাধ্যমিকেই এই ধাক্কা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও তাই দুশ্চিন্তায়। পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে৷ তা নিয়ে অযথা অন্য ছাত্র বা অভিভাবকরা চিন্তিত হবেন কেন? ছাত্ররা যেমন পরীক্ষা দিয়েছে, তেমনই ফল করবে৷’’