রাতে টিউশন থেকে ফেরার পথে মাধ্যমিক পড়ুয়াকে গণধর্ষণ

রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ টিউশন থেকে ফেরার সময় সেই আঁধার পথেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৪
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাম লাগোয়া প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় কোনও আলো নেই। সন্ধের পরেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ টিউশন থেকে ফেরার সময় সেই আঁধার পথেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। অভিযুক্ত গ্রামের দুই যুবক। দু’জনেই বিবাহিত এবং মেয়ের বাবা।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে বৃহস্পতিবার রাতে বছর সাতাশের কাঞ্চন মুর্মু ও গুরুচরণ হেমব্রমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতা ওই কিশোরী। তার মেডিক্যাল পরীক্ষাও হয়েছে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত দুই অভিযুক্তের কেউ ধরা পড়েনি। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “অভিযোগ দায়েরের আগেই ওই দুই যুবক পালিয়েছে। তবে আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি। ওদের ধরে ফেলব।”

অন্ধকার ওই মোরাম রাস্তা নিয়ে ডেবরার এই গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। বিপদ এড়াতে কিশোরী-যুবতীরা ওই পথে দল বেঁধে পড়তে যায়। বুধবার রাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রীও টিউশন শেষে দুই বন্ধুর সঙ্গে ফিরছিল। তবে বাড়ির কাছের ৫০ মিটার রাস্তা একাই ফিরছিল মেয়েটি। সেখানেও কোনও পথবাতি নেই। কিশোরীর অভিযোগ, সাইকেলে যাওয়ার সময় তার পথ আটকায় কাঞ্চন ও গুরুচরণ। তারপর মুখ চেপে ছুরি দেখিয়ে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে যায়। সেখানেই ওই দুই যুবক তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিধায়কের ভাইপোর মিল থেকে উদ্ধার চোরাই কাঠ

এ দিকে, রাত হয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করে ছাত্রীর পরিবার। কিশোরীর বাবা বাইক নিয়ে বেরোন। বাইকের আলোতেই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। ওই ছাত্রীর মা বলেন, “মাধ্যমিকের কটা দিন বাকি। মেয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ওই দুই যুবকের কঠোর শাস্তি চাই আমরা।”

আরও পড়ুন: রাজ্যের দুর্গাপুজোতেও এ বার নজর আয়করের, ৪০টি প্রধান পুজো কমিটিকে তলব

স্থানীয় সূত্রে খবর, গুরুচরণ এবং কাঞ্চন দু’জনেই আগের ভিন্‌ রাজ্যে সোনার কাজ করত। তবে বছর দুয়েক হল গ্রামে ফিরে চাষবাস করছে। গুরুচরণের দুই শিশুকন্যা আর কাঞ্চনের বছর দুয়েকের এক মেয়ে রয়েছে। গ্রামে এমন কাণ্ড ঘটে যাওয়ায় সকলেই হতবাক। আর মহিলারা আতঙ্কিত। স্থানীয় বাসিন্দা সানোয়ারা বিবি বলেন, “পঞ্চায়েত থেকে পথবাতি বসায়নি। সন্ধের পরে ওই রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকে। চলতে ভয় করে।” ওই ছাত্রীর স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরও বক্তব্য, “ওই পথে বহু পড়ুয়া যাতায়াত করে। আলো লাগানো সত্যি জরুরি।”

সমস্যা মানছেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ জুলফিকর। তিনি বলেন, “গ্রামে বিদ্যুৎ থাকলেও পথবাতি এখনও বসাতে পারিনি। তবে রাস্তা পিচের হচ্ছে। পরে পথবাতিও বসানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন