Mamata Bandopadhyay

‘১০ বছর অপেক্ষায় ছিলাম, এখন আমি শান্তিতে মরতেও পারি’

সিঙ্গুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার অবৈধ ভাবে জমি অধিগ্রহণ করেছিল। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে এ কথা জানিয়ে দিল। সেই রায়ের খবর পেয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী বললেন তিনি?

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ১৫:০৭
Share:

সিঙ্গুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার অবৈধ ভাবে জমি অধিগ্রহণ করেছিল। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে এ কথা জানিয়ে দিল। সেই রায়ের খবর পেয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী বললেন তিনি?

Advertisement

এর জন্য গত ১০ বছর অপেক্ষা করছি। আমি সিঙ্গুর নিয়ে অপেক্ষা করেছিলাম।

২০০৬-এর ৩ ডিসেম্বর থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত অনশন করেছিলাম এর প্রতিবাদে।

Advertisement

এই জয়ে চোখের জল মেশানো।

সিঙ্গুর আন্দোলন থেকে মা-মাটি-মানুষ স্লোগান নিয়ে এসেছিলাম।

মহাশ্বেতাদির কথা মনে পড়ছে।

তাপসী মালিক খুন হল, সেই সময়ের কথা মনে পড়়ছে। তার বাবা এসেছিলেন আমার মঞ্চে, এই ঘটনা জানাতে।

তাপসী ছাড়াও আরও ১৪ জন শহিদ হন।

তিনি বেঁচে থাকলে আজ হাজার চুরাশির মা সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন।

কবীর সুমন মঞ্চে নিয়ে এসেছিলেন মহাশ্বেতা দেবীকে।

সিঙ্গুরের পাশাপাশি সেই সময়টায় নন্দীগ্রাম আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

সুতরাং এই যে শহিদ হওয়া মানুষগুলো— সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম এমনকী নেতাইয়ের শহিদদের কথা স্মরণ করছি।

আমি মনে করি, রাজ্যের নামকরণ বাংলা হওয়ার পরে বাংলা মায়ের আঁচলে এই সম্পদ এল।

আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। এখনও রায় হাতে পাইনি। ১০ সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

আগামী কাল বিকেল আড়াইটেতে বিশেষ প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছি। কী ভাবে আদালতের নির্দেশ মানা হবে তা নিয়ে আলোচনা করব।

আমি যে হেতু বাইরে যাচ্ছি, ফিরে এসে পরের প্রশাসনিক বৈঠক সিঙ্গুরে করব।

১৪ সেপ্টেম্বর বিজয় সমাবেশ সিঙ্গুরেই হবে।

আজ থেকেই ওখানে উত্সব হচ্ছে। বসন্ত উত্সব, শিউলি উত্সব হচ্ছে।

এই ঐতিহাসিক রায়কে সম্মান জানাতে গোটা রাজ্য জুড়ে আগামী ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সিঙ্গুর উত্সব পালন করার জন্য অনুরোধ করছি।

সারা দিন রাজ্যের সমস্ত ব্লকে এই উত্সব পালন করা হবে।

কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে এই সিঙ্গুর পর্ব।

বিগত সরকারের আমলে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ভুল ছিল।

সে দিনের সরকারি সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক আত্মহত্যা ছিল।

জমি ফেরত দেব। সবাইকে বলব, আমরা সিস্টেম করে চাষিদের জমি ফেরত দেব। তাঁদের সবটাই জানাব।

আমি ভীষণ খুশি। এখন আমি শান্তিতে মরতেও পারি।

আমি সবাইকে ভালবাসি। কোনও মানুষ গরিব হয়ে জন্মগ্রহণ করেন না। কোনও মানুষ রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না।

অহঙ্কার করে শেষ কথা বলার কোনও মানে হয় না। আমি মানুষকে ভালবাসি।

সাধারণ মানুষকে ভালবেসে কাছে টানতে হবে। কেউ কারও কেনা নয়।

এই রায়ের পর কারখানার কোনও প্রশ্ন নেই ওখানে।

সিঙ্গুরের কৃষকরা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াননি।

বেঙ্গল ইজ দ্য ফাইনাল ডেস্টিনেশন ফর ইন্ডাস্ট্রি। গোটা দেশে কোথাও বিনিয়োগ হচ্ছে না।

সরকারে এসে প্রথম কাজ ছিল এই চুক্তি বাতিল করা। তার আগে জমি আমরা নিজেদের হাতে রাখি। যাতে অন্য কেউ এটা না নিয়ে নিতে পারে।

সিঙ্গুর একটা ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিগণিত হবে। নন্দীগ্রাম থাকবে। নেতাইও থাকবে।

দেখতে থাকো, দেখে যাও।

আরও খবর- সিঙ্গুর: জমি বিবাদের দলিল

আরও খবর- ফিরে দেখা সিঙ্গুর লড়াই...

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement