আটা কোন দলের, দায় এড়াচ্ছে দেগঙ্গা

তিন মাস আগে ডেঙ্গির রমরমার সময়ে পঞ্চায়েতের ছড়ানো ‘ব্লিচিং’ মুরগিতে খেয়ে গিয়েছিল! সোমবার নদিয়ার প্রশাসনিক সভায় এই ঘটনাকে গুরুতর অপরাধ (সিরিয়াস ক্রাইম) আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দোষ চাপিয়েছেন বিরোধীদের ঘাড়ে।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৯
Share:

‘ব্লিচিং’ খুঁটে খাচ্ছে মুরগি। ফাইল চিত্র।

তিন মাস আগে ডেঙ্গির রমরমার সময়ে পঞ্চায়েতের ছড়ানো ‘ব্লিচিং’ মুরগিতে খেয়ে গিয়েছিল! সোমবার নদিয়ার প্রশাসনিক সভায় এই ঘটনাকে গুরুতর অপরাধ (সিরিয়াস ক্রাইম) আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দোষ চাপিয়েছেন বিরোধীদের ঘাড়ে। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছর উত্তর চব্বিশ পরগনার দু’টি জায়গা থেকে ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল। ওই পঞ্চায়েত দু’টি অন্য দলের। সেখানে ব্লিচিংয়ের বদলে আটা দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

গত বছর ২৪ অক্টোবর ব্লিচিংয়ের বদলে আটা ছড়ানোর ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার ঝিকরা ২ পঞ্চায়েতের চটকাবেড়িয়া গ্রামে। আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবর নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝিকিরা ২-এ জিতেছিল সিপিএম। কিন্তু বছর দুয়েক আগেই পাশা উল্টে গিয়েছে। দল ভাঙিয়ে অনাস্থা এনে পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল। ডেঙ্গির দাপটের সময় ঝিরকা ২ পঞ্চায়েত রাজ্যের শাসক দলেরই দখলে ছিল। এখনও তাই।

আটা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল পঞ্চায়েত সদস্য আনোয়ারা বিবি ও তাঁর স্বামী মফিজুল লস্করের বিরুদ্ধে। আনোয়ারা অসুস্থ। তাই কাজটা হয়েছিল মফিজুলের হাত দিয়েই। মফিজুল এ দিন জানান, তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত ভোটে জিতেছিলেন সিপিএমের টিকিটে। তার পর আর পাঁচ জনের সঙ্গে দল পাল্টে তৃণমূলে নাম লেখান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরে আনোয়ারাকে ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া শাসক দলের স্থানীয় নেতারা। ‘‘উনি তো তৃণমূলের সদস্য নন’’— অল্প কথায় কাজ সারলেন পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের সাহাবুদ্দিন মণ্ডল।

Advertisement

আপনারা এখন কোন দলের? প্রশ্ন শুনে হাঁ মফিজুল। আমতা আমতা করে বললেন, ‘‘স্ত্রী এবং আমি দু’জনেই তৃণমূলে আছি বলেই তো জানি।’’ গুরুতর অসুস্থ আনোয়ারার সঙ্গে এ দিন কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ব্লিচিংয়ের নামে আটা ছড়ানোর স্মৃতি এখনও টাটকা রহিমা বিবি, মহম্মদ মনিরুলদের কাছে। তাঁরা বললেন, ‘‘তখন ঘরে ঘরে জ্বর। মড়ক লাগার মতো অবস্থা। হাসপাতালের বাইরে রোজ হাজার হাজার মানুষের লাইন। সকলের গায়ে জ্বর। এমন পরিস্থিতিতে ওই ঘটনার কথা জানতে পেরে ক্ষোভ সামলাতে পারিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলার পরে যদি তদন্ত হয়, তা হলে ভালই।’’ মফিজুল এখন বলছেন, কাজটা ‘ভুল করে’ হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী দোষ দিলেও সেই ভুলের দায় নিতে নারাজ সিপিএম। জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের ইমতিয়াজ হোসেনের কটাক্ষ, ‘‘আমাদের দল ভাঙিয়ে ওরা পঞ্চায়েতের দখল নিল। এখন কেমন লাগে দেখুক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement