Mamata Banerjee

কোনও রাজনৈতিক দল নয়, জি-২০তে দেশের স্বার্থই দেখুন, বৈঠকে মোদীর কাছে দাবি মমতাদের

কংগ্রেস, বাম, ডিএমকে-র মতো বিরোধী দলগুলিও দলের আগে দেশকে রাখার আর্জি জানিয়েছে মোদী সরকারকে। একইসঙ্গে বিদেশনীতি এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে কেন্দ্রের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১৪
Share:

জি-২০ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

কোনও দলের নয়। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বছরভরের কর্মসূচিতে যেন দলমত নির্বিশেষে দেশকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি ভবনে আজ প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে জি-২০ সংক্রান্ত বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীদের সমস্বর ছিল এটাই।

Advertisement

তিন দিনের দিল্লি সফরে আজ বিকেলে রাজধানী পৌঁছেছেন তৃণমূল নেত্রী। তার পরই চলে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ভবনে বৈঠকে যোগ দিতে। পরে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খোলেননি। তবে রাজনৈতিক সূত্রের খবর, তিনি বৈঠকে জানিয়েছেন ভারত জি-২০-র সভাপতিত্ব করছে এটা খুবই সুখবর। এই সুযোগকে যথাসম্ভব কাজে লাগাতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। এরপরেই তিনি বলেন, জি-২০-র কর্মসূচি যেন দেশের স্বার্থ বহন করে, কোনও দলের নয়। তিনি বহুদলীয় প্রতিনিধি দলের বিভিন্ন সময়ে বিদেশ সফরের অতীতের স্মৃতিচারণ করেছেন বলেও খবর। জানিয়েছেন, বিদেশনীতির প্রশ্নে সব দলের এক হওয়াটাই কাম্য। উদাহরণ হিসেবে, বৈঠকে উপস্থিত সিপিআই নেতা ডি রাজাকে দেখিয়ে মমতা বলেছেন এক বার তিনি এবং রাজা একই প্রতি্নিধি দলে ভিয়েতনামে গিয়েছিলেন।

কংগ্রেস, বাম, ডিএমকে-র মতো বিরোধী দলগুলিও দলের আগে দেশকে রাখার আর্জি জানিয়েছে মোদী সরকারকে। একইসঙ্গে বিদেশনীতি এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে কেন্দ্রের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। অবিজেপি ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী এবং ৫ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আজ বক্তব্য পেশ করেছেন বৈঠকে। সার্বিক ভাবে জি-২০-তে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও কংগ্রেস এবং সিপিএম-র নেতাদের কন্ঠে কিছুটা সমালোচনার স্বর শোনা গিয়েছে। উপস্থিত কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেছেন, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ২০টি রাষ্ট্রই সভাপতিত্বের সুযোগ পায়। এটি কোনও দেশের বিশেষ সরকারের বা রাষ্ট্রনেতার বা ব্যক্তির সাফল্য নয়। ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে ভারত জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির গোষ্ঠীর (ন্যাম) সভাপতি হয়েছিল। একইসঙ্গে তিনি বলেন আমেরিকার ভিসা পেতে তো ৬ মাস লেগে যাচ্ছে। এর কূটনৈতিক সুরাহা করা হোক। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, ধনী দেশগুলিই জি-২০-র সুবিধে নেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছে, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ঘাড়ে বোঝা চেপেছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, এটা কোনও সরকার বা বিজেপি-র সাফল্য নয়, দেশের প্রাপ্তি। কিন্তু যেহেতু অমৃত মহোৎসবের মধ্যে জি-২০-র সভাপতিত্ব ভারতের কাছে এসেছে, সেই সুযোগ দেশকে নিতে হবে। সমস্ত দলের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গত ৮ বছরে সরকারের কাজ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির খতিয়ান দিয়েছেন। কংগ্রেস এবং বামেদের বক্তব্য, অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের মতো দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি নিয়ে বেশি করে মাথা ঘামাক কেন্দ্র। বৈঠকে ছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল, এম কে স্ট্যালিন, জগন্মোহন রেড্ডি, দেবগৌড়ার মতো নেতারা। পরে স্ট্যালিন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘ভারত জি-২০-র সভাপতি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই। ভারতের উপরে গোটা বিশ্বের নজর রয়েছে। আশা করি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোটা বিশ্বে অহিংসা, শান্তি ও সাম্যের বাণী প্রচার করবেন।’’ বৈঠকে আসেননি নীতিশ কুমার এবং কে চন্দ্রশেখর রাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন