Mamata Banerjee

নন্দীগ্রামে পরপর সভা মমতা-শুভেন্দুর 

জমি আন্দোলনের সময় থেকেই বরাবর এই দিনটিতে ‘শহিদ’দের শ্রদ্ধা জানাতে হাজির থাকেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৪
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে এ বার ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনে’ও ‘ভাগ’ বসাতে চাইছে বিজেপি। সেই জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে ‘শহিদ দিবসে’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পরদিনই সেখানে বিজেপি-র মঞ্চে শুভেন্দু আরও একটি সভা করবেন।

Advertisement

জমি আন্দোলনের সময় থেকেই বরাবর এই দিনটিতে ‘শহিদ’দের শ্রদ্ধা জানাতে হাজির থাকেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু। মমতা অবশ্য বিগত কয়েক বছরে ‘শহিদ দিবসে’ নন্দীগ্রামে যাননি। তবে আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেত্রী নিজে সভা করবেন বলে ইতিমধ্যে তৃণমূলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। শুভেন্দু ৭ জানুয়ারি শহিদ বেদিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, মাল্যদানের কর্মসূচি করলেও সভা করবেন পরদিন। প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপি-র মঞ্চে ‘নন্দীগ্রাম দিবসে’র সভা হবে কেন!

বিজেপি’র তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েকের দাবি, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজের মতো নেতা-নেত্রীরা এসেছিলেন। ফলে, নন্দীগ্রামের সঙ্গে বিজেপি-র সম্পর্ক নেই, এটা বলা ভুল।’’ তবে এত দিন কেন নন্দীগ্রাম দিবসে বিজেপিকে দেখা যায়নি? সেই সদুত্তর মেলেনি। তা ছাড়া, শুভেন্দুর ৭ জানুয়ারির ‘শহিদ স্মরণ’ কোন ব্যানারে হবে, তা-ও স্থির হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিজেপি’র তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ বলেন, ‘‘৭ জানুয়ারি শুভেন্দুর সঙ্গে আমরাও থাকব। তবে ওই কর্মসূচি বিজেপি না ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে হবে, তা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্থির করবেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫টি আসনই দখল করবেন, দাবি শুভেন্দুর

৮ জানুয়ারির সভা যে শুভেন্দু নিজ উদ্যোগে করছেন, তা বৃহস্পতিবার নিজেই স্পষ্ট করেছেন নন্দীগ্রামের পদত্যাগী বিধায়ক। কাঁথির সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে বলেছি, ৮ তারিখ নন্দীগ্রামে সভা করতে চাই। উনি বলেছেন ‘গো অ্যাহেড’। আমি নিজে সেই সভার আয়োজন করছি।’’ পাশাপাশি, প্রাক্তন নেত্রীকে শুভেন্দুর বার্তা, ‘‘৭ তারিখে নন্দীগ্রামে আসুন, ভাষণ দিন। আমি জানি আমার বিরুদ্ধে আপনি কী বলবেন। ৮ তারিখ আমি সভা করব। আপনার সব কথার উত্তর দেব।’’

নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া সেতুর কাছে জমিরক্ষা আন্দোলনে যুক্ত ভরত মণ্ডল, শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতির দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই তিনজনকে জমিরক্ষা আন্দোলনে প্রথম ‘শহিদ’ মনে করেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের স্মরণে ২০০৮ সাল থেকে ভাঙাবেড়া সেতুতে স্মরণসভা করে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি এবং তৃণমূল। এ বার মমতার সভার পাশাপাশি ভাঙাবেড়ায় শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও। তবে মমতার সভা আয়োজনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর কোনও ভূমিকা থাকছে না বলেই খবর।

আরও পড়ুন: রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটে সিলমোহর সনিয়ার, উজ্জীবিত দুই শিবিরই

জেলায় দলনেত্রীর সভা, আপনি দলের জেলা সভাপতি। আপনাকে বাদ দিয়েই কি আয়োজন হচ্ছে? শিশিরবাবুর জবাব, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

সভার অন্যতম আয়োজক শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘৭ জানুয়ারি দুপুর একটায় গোকুলনগরের মাঠে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আড়াই লক্ষ জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর তমলুকের নিমতৌড়িতে দলের সব বিধায়ক, জেলার নেতৃত্ব, ব্লক সভাপতিদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন