উদ্বোধন: উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
উড়ানের দেরি হওয়ায় সোমবার সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠানে আসার কথা থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে এসে পৌঁছন বেলা পাঁচটার পরে। এ দিকে বেলা সাড়ে বারোটা থেকে গ্যালারিতে পৌঁছে গিয়েছিল স্কুল পড়ুয়ারা। দুপুরে টিফিনের প্যাকেট পেলেও তারপরে কেটে গিয়েছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। ততক্ষণে মুখ শুকিয়ে কাঠ খুদেদের। ফের খিদেও পেয়ে গিয়েছে। পড়ুয়াদের অনেকেই উশখুশ করছিল। তাড়াহুড়োর মধ্যেও সেটা নজর এড়ালো না মুখ্যমন্ত্রীর।
মঞ্চ থেকেই বাচ্চাদের বললেন, ‘‘অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। তোমাদের খেতে দিয়েছে? ইস! অনেকক্ষণ থেকে এসে বসে আছে। ওদের একটু খাবার দিও।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই স্নেহভরা কথা শুনে গ্যালারি থেকে বাচ্চাদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চেই পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন বাচ্চাদের খাবার দেওয়া হয়েছে কি না? তার উত্তরে মন্ত্রী জানান, খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এতক্ষণ ধরে বসে থাকতে হয়েছে, তার উপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে খাবার দিতে বলেছেন তারপরেও বাচ্চাদের কেন দ্বিতীয়বার খাবার দেওয়া হল না। নিদেনপক্ষে একটি করে বিস্কুটও কেন দেওয়া গেল না উঠেছে সেই প্রশ্নও।
মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘বেলা দুটো নাগাদ বাচ্চাদের ভারী টিফিন দেওয়া হয়েছে। প্রায় ১০৫০০ প্যাকেট বিলি করা হয়েছে গ্যালারিতে। আমরা প্রতিটি স্কুলের প্রতিনিধিদের ডেকে টিফিনের প্যাকেট বিলি করেছি। দ্বিতীয়বার দেওয়ার কথা ছিল না।’’ কি ছিল সেই টিফিনের প্যাকেটে? তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিকরা জানান, প্যাকেটে একটি কেক, ঠান্ডা পানীয়ের একটি প্যাকেট এবং একটি বানরুটির পদ ছিল। গৌতমবাবুর ব্যাখ্যা মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তারা অনেক্ষণ বসে রয়েছে, তাদের খেতে দেওয়া হয়েছে কিনা।
শিলিগুড়ি লাগোয়া পুটিনবাড়ি এলাকা থেকে এসেছিল ছাত্র মাইকেল কেরকেট্টা। সে জানাল, টিফিন খেয়েছে অনেকক্ষণ আগে, তাই আবার খিদে পেয়েছে। একই কথা জানাল সেবকের একটি হিন্দি স্কুলের ছাত্রী সোনাক্ষী রাই। শিলিগুড়ির মহকুমা আধিকারিক সিরাজ দানেশ্বর জানান, স্কুলে এ দিন মিড-ডে মিল খাইয়ে বাচ্চাদের মাঠে আনা হয়েছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বাচ্চাদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা ছিল। দেরি হওয়ায় বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী ক্রীড়াঙ্গণ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। কিন্তু তাদের ফিরতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠান শেষ না হলে কেউই রওনা হতে পারবে না।