‘বোমা তৈরি তো দেখছি কুটিরশিল্প’, ক্ষুব্ধ মমতা

বিরোধী থাকাকালীন দীর্ঘদিন রাজ্যে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে জোরদার আন্দোলন করেছিলেন মমতা। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও একইরকম উদ্বেগ ছিল তাঁর গলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নামখানা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৫
Share:

নামখানায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

সুন্দরবন লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রকাশ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের উপস্থিতিতে বললেন, ‘‘বোমা তৈরি তো প্রায় কুটিরশিল্প হয়ে গেছে। সে সব উদ্ধার করা হচ্ছে কি?’’ এই প্রসঙ্গেই এই অঞ্চলের সাত-আটটি থানার নাম করেই পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। বোমা তৈরি যে ‘কুটিরশিল্প’ হয়ে উঠেছে, এমন অভিযোগে বিরোধীরা সরব। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেও কিছুটা সেই সুর ধরা পড়ল।

জয়নগরের দলীয় বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষের গাড়িতে হামলার ঘটনায় সম্প্রতি তিন জন খুন হয়েছিলেন। এদিন পুলিশি ব্যবস্থা পর্যালোচনায় সেই ঘটনার জন্য সরাসরি কৈফিয়ত চান জয়নগরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে। ভরা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘‘এত বড় একটা হামলা হল, পরিকল্পনা হল, আপনারা কিছু জানতে পারলেন না কেন? পুলিশ কী করে?’’ মঞ্চে তখন স্বরাষ্ট্র সচিব-সহ রাজ্য পুলিশের পরামর্শদাতা, ডিজি-সহ জেলার সব কর্তারাই উপস্থিত। কেউই অবশ্য এই প্রশ্নের জবাব দেননি। তার আগে অবশ্য ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারেও খোঁজ নেন মমতা।

Advertisement

এ নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী এই অঞ্চলের বাসন্তী, ক্যানিং, গোসাবা, কুলতলি, মন্দিরবাজার ও পাথরপ্রতিমার মতো এলাকা নিয়ে উষ্মা জানান। তিনি বলেন, ‘‘এই জায়গাগুলির অনেক রকম ইতিহাস রয়েছে। বলে রাখছি, আর যেন কোনও ঘটনা না ঘটে।’’ তারপরই কুলতলি থানার অফিসার ইনচার্জ বলার চেষ্টা করেন, সম্প্রতি একটি বোমা তৈরির কারখানার হদিশ তাঁরা পেয়েছেন। বোমা উদ্ধারের কাজও চলছে। কিন্তু এর পরেই ওই আধিকারিককে বোমা ও বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে যে তিনি তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট নন।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রকে আর তথ্য নয়, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

বিরোধী থাকাকালীন দীর্ঘদিন রাজ্যে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে জোরদার আন্দোলন করেছিলেন মমতা। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও একইরকম উদ্বেগ ছিল তাঁর গলায়।

এ দিন কুলপি থানার অফিসার ইনচার্জ চার্জের বিরুদ্ধে দলীয় বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারের অভিযোগ নিয়ে এই বৈঠকেই শুনানির ঢঙে মধ্যস্থতা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়ক অভিযোগ করেন, পুলিশ জনপ্রতিনিধিদের মানছে না। মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। দু’পক্ষের কথা শুনে পরস্পরকে বসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন