শিল্পে জঙ্গিপনা বন্ধে কড়া মমতা

কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে রাজ্যে কথায় কথায় বন্‌ধ, ধর্মঘট ডাকা বন্ধ করেছেন। এমনকী বন্‌ধে অফিসে না এলে সরকারি কর্মীদের বেতন কাটার পাশাপাশি একদিনের চাকরি-ছেদেরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

বার্তা: দলের কোর কমিটির বৈঠকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে। ছবি: সুমন বল্লভ।

কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে রাজ্যে কথায় কথায় বন্‌ধ, ধর্মঘট ডাকা বন্ধ করেছেন। এমনকী বন্‌ধে অফিসে না এলে সরকারি কর্মীদের বেতন কাটার পাশাপাশি একদিনের চাকরি-ছেদেরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তৃণমূল নেত্রীকেই শুক্রবার দলের শ্রমিক সংগঠনের জঙ্গিপনা বন্ধে কড়া ধমক দিতে হল। কারণ, বেশ কিছু শিল্প সংস্থা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই জঙ্গিপনার বিহিত চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন।

Advertisement

মূল অভিযোগ, একই কারখানায় একাধিক শ্রমিক ইউনিয়ন। এবং প্রত্যেকেরই দাবি, তারাই ‘আসল’! দলীয় ভাবে তৃণমূল একটি শ্রমিক সংগঠনের কথা বললেও বাস্তবে বহু জায়গাতেই তা হয়নি। সে কারণেই এ দিন দলের কোর কমিটির বৈঠকে আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনকে সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘‘হাওড়া, হুগলি, আসানসোল, দুর্গাপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি অংশ থেকে নানাবিধ অভিযোগ আসছে। শ্রমিক সংগঠনের নামে জঙ্গিপনা আমি মানব না।’’

বিভিন্ন সংস্থার নাম ধরে ধরে মমতা বুঝিয়ে দেন, এ ব্যাপারে তাঁর কাছে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে।

Advertisement

শ্রমিক সংগঠনে কোনও সমস্যা হলে তা মেটাতে একা সিদ্ধান্ত না নিয়ে দলের পুরনো শ্রমিক নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্যও দোলাকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগে দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার পথে তাঁর মায়ের আসন নিয়ে বিমান সংস্থার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দোলা। কেন তাঁর আচরণের জন্য দলকে বারবার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, তা নিয়ে বৈঠকেই দোলাকে প্রশ্ন করেন দলনেত্রী। হুগলিতে একাধিক চটকলে গোলমাল চলছে। এ প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে ভৎর্সনা করেন মমতা। তিনি জানান, তপনের ফোন বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে।

এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়েছেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারও। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বারাসতেই কেন ছাত্র পরিষদের ছেলেরা গোলমালে জড়াচ্ছে? এ জন্য কাকলি, বারাসত পুরসভার

চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় এবং মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষকেও সতর্ক করেন মমতা। তিনি খোঁজ নেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামীরও। সীমান্ত এলাকা থেকে নারায়ণবাবু সম্পর্কে নানা অভিযোগ এসেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বসিরহাটের সাংসদ

ইদ্রিশ আলিকেও মমতা ‘বাড়াবাড়ি’ না করতে বলেন।

বাঁকুড়ার ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটে এবং ইন্দাস ব্লকের সভাপতি রবিয়াল হোসেন কেন নিজেদের মধ্যে গোলমাল করছে, তা নিয়েও ক্ষোভ জানান মমতা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে যে তিনি ক্ষুব্ধ, তা-ও বুঝিয়েছেন মমতা। মালদহের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল। তাঁকে সরিয়ে প্রসূন রায়কে দায়িত্ব দেন মমতা। দল থেকে বন্দর এলাকার শ্রমিক নেতা মেঘনাথ পোদ্দারকে বহিষ্কার করার কথাও জানান তিনি।

সম্প্রতি রাজ্যের সঙ্গে বন্দরের গোলমালের সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ নবান্নে ওই নেতার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন