পদের ভিন্ন নাম ঘুচিয়ে বেতন বাড়ল কলেজে

সোমবার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই শিক্ষকদের এ বার থেকে বলা হবে ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার’। বাড়ানো হল তাঁদের বেতনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

তাঁদের সকলেই কলেজে পড়ান। তবে তিন রকম পরিচয়ে। আংশিক সময়ের শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক পূর্ণ সময়ের শিক্ষক এবং অতিথি শিক্ষক। সেই তিন পরিচয় আর থাকছে না। ওই তিন ধরনের পদ তুলে দিয়ে একটিই পদ গড়া হয়েছে বলে সোমবার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই শিক্ষকদের এ বার থেকে বলা হবে ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার’। বাড়ানো হল তাঁদের বেতনও।

Advertisement

হাওড়ার প্রশাসনিক সভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কলেজ নিজেদের আয় থেকে ওই সব শিক্ষককে বেতন দেয়। পার্ট টাইম শিক্ষক, হোলটাইম কন্ট্রাক্টচুয়াল লেকচারার ও গেস্ট লেকচারার— শিক্ষকপদের এই সব নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। কারণ এঁরা ব্যাঙ্কঋণ পান না। সম্মানের সঙ্গে কিছু করতেও পারেন না।’’

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, সরকারের হাতে টাকা নেই। তবু ওই শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে। তিনি জানান, নতুন স্টেট এডেড কলেজ টিচার পদে দু’টি বিভাগ থাকবে। সেই ভাগটা হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে। কেউ কেউ আছেন, যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে। তাঁরা এক রকম বেতন পাবেন। যাঁদের ইউজিসি নির্ধারিত যোগ্যতা নেই, তাঁদের বেতন ঠিক করা হবে নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে। দু’টির মধ্যে সামান্য তফাত থাকবে।

Advertisement

ব্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁদের ইউজিসি নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে, তাঁরা হবেন স্টেট এডেড কলেজ টিচার ক্যাটগরি-১। ওই পদে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করে থাকলে সেই শিক্ষক বা শিক্ষিকা ৩০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। ১০ বছরের কম করলে মিলবে ২৬ হাজার। ১০ বছর শেষ করলে ৩০ হাজারই পাবেন তাঁরা। যাঁদের ইউজিসি নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, তাঁরা বলা হবে স্টেট এডেড কলেজ টিচার ক্যাটিগরি-২। ১০ বছর চাকরি হয়ে গেলে তাঁরা এ বার থেকে পাবেন ২০ হাজার টাকা। ১০ বছরের কম চাকরি হলে ১৫ হাজার। মমতার আশ্বাস, যাঁরা এর থেকে বেশি পাচ্ছেন, তাঁদের পে-প্রোটেকশন (বেতন সুরক্ষা) দেওয়া হবে। সব স্টেট এডেড কলেজ টিচারের বেতন বছরে তিন শতাংশ করে বাড়বে। চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর। অবসরের পরে স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের গ্র্যাচুইটি এক লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লক্ষ টাকা করা হবে। ওই শিক্ষকেরা অন্যত্র বদলির সুযোগও পাবেন। উচ্চশিক্ষা দফতরের বেঁধে দেওয়া রুটিন অনুযায়ী সপ্তাহে ক্লাস করতে হবে তাঁদের।

কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল বা কুটাব-এর রাজ্য সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় বাস্তবে আংশিক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের বেতন অনেকটাই কমে যাচ্ছে। কুটাবের দাবি হল সমকাজে সমবেতন, অবসরকালীন বয়স ৬৫ বছর, প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি, অবসরকালীন ভাতা ছ’লক্ষ টাকা। এই সব দাবিতে এ দিন অনশন আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কুটাব। অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের অনশনে বসতেই দেয়নি। গৌরাঙ্গবাবু জানান, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে আমরণ অনশনে বসতে গেলে পুলিশ তাঁদের বহু সমর্থককে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে ক্লাস বয়কট ও কালা দিবস পালন করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন