পনেরো দিন ধরে শুরু সরকারি কাজকর্মের পর্যালোচনা সফরে পাঁচটি জেলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে তোপের মুখে পড়েছিল, বুধবার তার ব্যতিক্রম হল। সরকারি বিলি-বন্টনের সভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বরং সন্তোষ প্রকাশ করে গেলেন জেলায় ‘সোনা ফলার’ আশা রেখে।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বরাবরই কৌলিন্য বজায় রেখেছে পূর্ব মেদিনীপুরের শাসক শিবির। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সেই কৌলিন্যেই এদিন কার্যত ‘সিলমোহর’ দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন যদি ভাল কাজ করে, যদি ভাল সংগঠক থাকে আর নীচের তলার নেতারা ভাল হলে সে জেলায় সোনা ফলে।’’
নভেম্বরের শেষে ঝাড়গ্রাম থেকে এই দফার জেলা সফর শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই শুরু হয়েছে ‘শাসন’। সেই সুর ছিল পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সরকারি প্রকল্প কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের প্রকাশ্যে ধমক দিয়েছেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এদিন প্রায় পঞ্চাশ মিনিটের বক্তৃতায় সেই রকম একটি বাক্যও উচ্চারণ করেননি মমতা। একবারই মনে করিয়ে দেওয়ার ঢঙে বলেছেন, ‘‘রেশন দোকান যেন ভাল চাল দেয়, ওজন যেন ঠিক দেয়, পঞ্চায়েত দেখবে।’’ শুধু তাই নয়, উন্নয়নের প্রসঙ্গে জেলার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শিশিরদা-রা বলছিলেন প্রতি ব্লকে কুড়িটা করে রাস্তা হয়েছে।’’
এখানে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চেই বক্তৃতা করার সুযোগ পান দুই অধিকারী— শিশির ও শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রীকে দেশনেত্রী হিসাবে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। শিশিরবাবু বলেন, ‘‘আসুন, এই সভা থেকেই আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করার আওয়াজ তুলি।’’ শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আর শুধু রাজ্যের নন, তিনি আজ দেশের জননেত্রী।’’
আজ বৃহস্পতিবার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক। এই বৈঠকের আগে অন্য জেলায় শাসক নেতারা যেমন গুটিয়ে থাকছেন, এখানে সেই ছবিটিও কিছুটা আলাদা। দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা কিছুটা ‘নিশ্চিন্তেই’ আছেন।