প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তা মমতার

রাজস্থানে নিহত আফরাজুল খানের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ রাজ্য থেকে ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

রাজস্থান-কাণ্ডের প্রতিবাদে হাজরা থেকে গাঁধী-মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মোমবাতি মিছিল। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

রাজস্থানে নিহত আফরাজুল খানের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ রাজ্য থেকে ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শুক্রবার বলেছেন, ‘‘মৃতের পরিবার কী ভাবে বেঁচে থাকবে, সে আমরা দেখে নেব। কিন্তু ওই রাজ্যে তো আরও অনেকে কাজে গিয়েছেন। তাঁদের কী হবে? এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন!’’

Advertisement

দেশ জুড়ে বিদ্বেষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করে রাজস্থানের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস এবং বাম দলগুলিও। তারা চায়, প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলুন মুখ্যমন্ত্রী। সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিআইয়ের প্রবোধ পণ্ডাদের আরও দাবি, রাজস্থান সরকারের উপরেও চাপ সৃষ্টি করা হোক।

মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠেও একই উদ্বেগ ধরা পড়েছে। এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের এক অনুষ্ঠানে এবং তার আগে নবান্ন থেকে বেরোনোর পথে, দু’দফায় মুখ খোলেন তিনি। নবান্ন থেকে বেরোনোর সময়ে মমতা বলেন, ‘‘ওই রাজ্যের ডিজি-র সঙ্গে আমাদের ডিজি-কে কথা বলতে বলেছি। ওখানে পশ্চিমবঙ্গের সাড়ে তিন হাজার কর্মী কাজ করেন। তাঁদের নিরাপত্তার দিকটিও তো দেখতে হবে।’’ মালদহের কালিয়াচকে আফরাজুলের বাড়িতে মন্ত্রী-সাংসদদের দলও পাঠাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হাও়়ড়া বা দুই মেদিনীপুরের মতো জেলা থেকে বহু শ্রমিক অন্য রাজ্যে গিয়ে নির্মাণ, জরি শিল্প-সহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করেন। ঘটনাচক্রে, ওই সব রাজ্যের বেশির ভাগই বিজেপি-শাসিত। গো-রক্ষা, লাভ-জেহাদ, ধর্মান্তর নিয়ে যে সব ঘটনা ঘটেছে, তার অধিকাংশই বিজেপি-শাসিত রাজ্যে। তাই তৃণমূল ও বিরোধীরা আফরাজুলের ঘটনায় বিজেপি-কে কোণঠাসা করতে দেরি করেনি। নির্মাণ শ্রমিকদের সংগঠন সিডব্লিউএফআই-ও রাজস্থানের ঘটনায় কড়া শাস্তি ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা দাবি করেছে।

আফরাজুলের বাড়িতে এ দিন দফায় দফায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব, জেলার পুলিশ সুপার, জেলাশাসক। কালিয়াচকে আজ, শনিবার পৌঁছচ্ছেন দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী এবং তিন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায় ও কাকলি ঘোষদস্তিদার। শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার হাজরা মোড় থেকে গাঁধীমূর্তি পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মোমবাতি মিছিল করে যুব তৃণমূল। ব্লকে ব্লকে আজ ধিক্কার মিছিল করবে শাসক দল। আর কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল হবে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের ডাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন