বছর দুয়েক আগের কথা। আবাসনের দেওয়াল থেকে বটগাছের শিকড় ছড়িয়ে তা ঢুকে পড়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পাম অ্যাভিনিউয়ের সরকারি আবাসনের ফ্ল্যাটের বাথরুমে। আবাসন কমিটি পুরসভার কাছে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বাথরুমের সংস্কার করে দেওয়ার জন্য বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করে অনুরোধ করেন। সেই দিনই পুরসভার লোক যায় বুদ্ধবাবুর ফ্ল্যাটে। তখনকার মতো সমস্যার সমাধানও হয়।
কিন্তু ঠিকমতো সংস্কার এখনও বাকি। আর তারই জন্য এ বার ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হতে হল বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে!
ঘটনাচক্রে, আজ, বৃহস্পতিবার বুদ্ধবাবুর জন্মদিন। তার আগের দিন বিকেলে বিধানসভায় নিজের ঘরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই জানতে পারেন বুদ্ধবাবুর আবাসনের বাথরুমটির দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। শোনামাত্রই পুর-কমিশনার খলিল আহমেদকে মমতার নির্দেশ, ‘‘বুধবার রাত থেকেই যেন বুদ্ধবাবুর বাথরুমের সংস্কার কাজ শুরু করা হয়।’’ বুদ্ধবাবুদের সুবিধা-অসুবিধা জেনে নিয়ে তাঁদের ফ্ল্যাটের যেখানে যেখানে মেরামতি প্রয়োজন, তাও অবিলম্বে করার নির্দেশ দেন খলিলকে।
কেন বুদ্ধবাবুর ফ্ল্যাটের মেরামতির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর তৎপরতা দেখায়নি, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। এমনকী, সরকারি সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও এখনও ওই ফ্ল্যাটের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা হিসেবে বুদ্ধবাবু সেটির মালিকানা পাননি জেনেও মমতা ক্ষুব্ধ। পুর-কমিশনারকে কিঞ্চিৎ ভর্ৎসনাও করেন।
সংস্কারকাজ চলাকালীন বুদ্ধবাবু চাইলে সরকারি কোনও অতিথিশালায় থাকতে পারেন বলেও প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই আবাসনের কাছে যে ভাবে আবর্জনা পড়ে থাকে, তা অস্বাস্থ্যকর বলেও উদ্বেগ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগে বুদ্ধবাবু অসুস্থ থাকার সময়ে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা। তখনই ওই ফ্ল্যাটের হাল দেখে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, বুদ্ধবাবু যে ভাবে থাকেন, তা ঠিক নয়। মমতা চান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওই পরিবেশ ছেড়ে অন্য কোথাও থাকুন। যদি তিনি রাজি না হন, তা হলে তাঁকে আপাতত কোনও অতিথিশালায় সরিয়ে মেরামতি করা হবে।