Mamata Banerjee

১০০ দিনের কাজ: মঞ্চে কেন্দ্রের ‘অপমানজনক’ তিন শর্ত লেখা নোট ছিঁড়ে প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রীর! ঘোষণা: রাজ্যের প্রকল্পই চলবে

মঙ্গলবার কোচবিহারে রাসমেলা ময়দানে রাজনৈতিক সভা করেন মমতা। সেই সভায় প্রথম থেকেই বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন। তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:

কোচবিহারের মঞ্চ থেকে কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

একশো দিনের কাজ নিয়ে আবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর এক বছর কেটে গিয়েছে। তার পরে কেন্দ্রের তরফ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে একশো দিনের কাজ নিয়ে বেশ কিছু শর্ত চাপানো হয়েছে বলে কোচবিহারের সভা থেকে দাবি করেন মমতা। কেন্দ্র কী কী শর্তের কথা বলেছে, তার কয়েকটি উল্লেখ করে মমতা স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘আমরা এই শর্ত মানি না। একশো দিনের কাজ বাংলাই করবে।’’ তার পরেই একশো দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্র যা বলেছে, তা যে কাগজে লিখে এনেছিলেন, সেটা সভামঞ্চেই ছিঁড়ে ফেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

মঙ্গলবার কোচবিহারে রাসমেলা ময়দানে রাজনৈতিক সভা করেন মমতা। সেই সভায় প্রথম থেকে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন। তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা। মমতা বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের টাকা দেওয়া চার বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছে। আবাস যোজনা বন্ধ। গ্রামীণ রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।’’ তার পরেই এই নিয়ে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা স্মরণ করেন মমতা।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ২০২১ সালের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে রেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের কোষাগার থেকে অর্থ দিয়ে মমতা ‘কর্মশ্রী’ নামে একটি বিকল্প প্রকল্প চালু করেন। সেই প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের শ্রমিকদের নির্দিষ্ট দিনের কাজ দেওয়া হয়। সেই প্রকল্পের সাফল্যের কথা মনে করিয়ে মমতার হুঙ্কার, ‘‘আমরা কারও ভিক্ষা চাই না।’’ মমতা জানান, দিন দুয়েক আগে একশো দিনের কাজ সংক্রান্ত একটি চিঠি কেন্দ্রের থেকে পেয়েছেন। তাঁর দাবি, সেই চিঠিতে কেন্দ্র কিছু শর্তের কথা বলেছে। কী কী শর্ত? কেন্দ্রের চিঠির কিছু অংশ একটি কাগজে লিখে এনেছিলেন মমতা। সেই কাগজ থেকে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ত্রৈমাসিক শ্রমবাজেট দেখাতে হবে।’’ অর্থাৎ, একশো দিনের কাজ নিয়ে শ্রম দফতরকে ত্রৈমাসিক হিসাব দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। সেই কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘বাজেট দেখানোর সময় কোথায়? এটা ডিসেম্বর মাস। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঘোষণা।’’

Advertisement

এ ছাড়াও, কেন্দ্রের দেওয়া আরও একটি শর্তের কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘বলা হয়েছে, একটা গ্রামসভায় মাত্র ১০ জন কাজ পাবে, এটা হয় কখনও? একটা পরিবারেই তো ১০টা গরিব লোক থাকে।’’ মমতা জানান, একশো দিনের কাজে প্রশিক্ষণের কথাও নাকি বলা হয়েছে। মমতা কথায়, ‘‘বলছে ট্রেনিং দিতে হবে। বলছে না হলে নাকি জমির কাজ করা যাবে না।’’ তার পরেই মমতা তাঁর গলার স্বর কয়েক গুণ চড়িয়ে হাতের কাগজ দেখিয়ে বলেন, ‘‘এটার কোনও ভ্যালু (মূল্য) নেই। ভ্যালুলেস (মূল্যহীন) কাগজ।’’ মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন, ‘‘আবার আমরা ক্ষমতায় আসব। আসব। কর্মশ্রীতে এ বার ৭৫ দিন কাজ হয়েছে। একশো দিনের কাজ বাংলাই করবে। চাই না তোমাদের ভিক্ষা। বাংলা নিজের পায়ে হাঁটতে জানে।’’

কোচবিহারের সভায় মমতা যে কাগজ নিয়ে এসেছিলেন তা দেখিয়ে বলেন, ‘‘এটা আমার নোট, কেন্দ্রের কোনও অর্ডার নয়। আমি অর্ডারটা পড়ে দিলাম। এটা আমি ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। আমি মনে করি এটা অপমান, অসম্মান।’’ তার পরে মমতা ওই কাগজ মঞ্চ থেকেই ছিঁড়ে ফেলে দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement