মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
পাহাড়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিমল গুরুঙ্গকে দ্রুত বৈঠকে বসাতে চাইছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আর সেই প্রচেষ্টার মধ্যেই দিঘার এক সরকারি অনুষ্ঠানে মমতা বললেন, ‘‘পাহাড়ে অচিরেই শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা তা করে দেব।’’
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশাসনের অন্দরে প্রশ্ন, তা হলে কি প্রাথমিক স্তরে হলেও কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়েছে? নবান্নের কর্তাদের একাংশ বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী ক’দিন আগেই পাহাড়ের নেতাদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হিংসার পথ ছেড়ে আলোচনায় বসতে চাইলে তাঁর আপত্তি নেই। কেন্দ্রও রাজ্যকে রাজধর্ম পালনের পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বার্তাই দিয়েছে। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রকেও সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। সিআরপি পাঠানো নিয়ে তারা যে অসহযোগিতা করেছে, তা রাজ্য সরকার ভোলেনি।’’ তবে, এখনই যে গুরুঙ্গদের বিরুদ্ধে পুরনো মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ওই কর্তা।
আরও পড়ুন: পাহাড় বন্ধে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
এক দিকে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, অন্য দিকে কিন্তু এ দিনও পাহাড়ে অশান্তির জন্য বিজেপি এবং কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘ওরাই পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়েছে। কিন্তু আমরা কেন্দ্রের চক্রান্তের কাছে কিছুতেই নতি স্বীকার করব না।’’ পাশাপাশি তাঁর আবেদন, ‘‘আর আগুন জ্বালাবেন না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।’’
এ দিনই আবার পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সাহিত্যিক, নাট্যকার-নির্দেশক, অভিনেতা, গায়ক-গায়িকাদের কয়েক জন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি দিয়ে দার্জিলিং সমস্যার সমাধান চেয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, দার্জিলিং পাহাড়ের একাংশের জন্য গোটা পাহাড়ের জনজীবন এখন পঙ্গু। তাঁদের প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, বাংলার মানুষ বরাবর পাহাড়ের মানুষের
স্বার্থে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। পাহাড়ের উন্নয়নে একাধিক উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়েছে। এমনকী, জিটিএ-র নামকরণের মধ্যেও গোর্খাল্যান্ড শব্দটি রয়েছে। এই বিশিষ্টজনদের দাবি, গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিটির কোনও ঐতিহাসিক মান্যতা নেই। একই সঙ্গে শিলিগুড়ির ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আবেদন, এই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন থামাতে পদক্ষেপ করুন।