নদিয়া, হাওড়ার পরে ব্যারাকপুর। লো-ভোল্টেজের অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী এক বছরের মধ্যে সারা দেশে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে আর মাত্র চারটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া বাকি। কিন্তু বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ এগোলেও লো-ভোল্টেজের জন্য গ্রামবাসীদের ভুগতে হচ্ছে। ফলে যে-লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন শুরু হয়েছিল, তার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে ইদানীং একই প্রশ্ন তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। প্রতিটি বৈঠকে লো-ভোল্টেজের প্রশ্নে রীতিমতো বিরক্ত মমতা। নদিয়ায় তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কেন টিমটিম করে আলো জ্বলবে? হাওড়ায় তো লো-ভোল্টেজের অভিযোগ আসার পরে রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তাদের দাঁড় করিয়ে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন তিনি। এ দিন ব্যারাকপুরে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, মানুষ কী ঝিরঝিরে টিভি দেখবে না ঝকঝকে!?
আরও পড়ুন
দলাদলি চলবে না, কড়া বার্তা মমতার
পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের গ্রামাঞ্চল এবং শহরের আশেপাশে লো-ভোল্টেজের সমস্যা নিয়ে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়ালও। লো-ভোল্টেজ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যুক্তি, ভাল বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গেলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির যে-ধরনের উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার, তা করা হচ্ছে না। সংস্কারেও খামতি থেকে যাচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। গয়ালের দাবি, এ বিষয়ে তিনি নজরদারি শুরু করেছেন।
মমতা নিজেও অনেকটা সেই অভিযোগই করছেন। ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি বেজায় ক্ষুব্ধ। বিদ্যুৎকর্তাদের কাজের খামতির পাশাপাশি লাইন টানার কাজ আটকে দিলে যে টিমটিম করেই আলো জ্বলবে, ব্যারাকপুরের বৈঠকে তিনি ফের সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির মতো কিছু অঞ্চলে লো-ভোল্টেজের সমস্যা সাংঘাতিক বলে এ দিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কয়েকটা মাওবাদী যা বোঝাচ্ছে, তা-ই খাচ্ছে! আর সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি কাজ করতে দিচ্ছে না।’’ নদিয়া, হাওড়া, ব্যারাকপুর— সর্বত্রই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন একটাই, লো-ভোল্টেজ থাকবে কেন? কেন ঝকঝকে আলো থাকবে না? কলকারখানা উন্নতমানের বিদ্যুৎ পরিষেবা পাবে না কেন?
কিন্তু লো-ভোল্টেজের ভূত আমজনতার পিছন ছাড়ছে না। কমছে না মুখ্যমন্ত্রীর মাথাব্যথাও।