পাশাপাশি: কোচবিহারে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে উড়ান পরিষেবা চালু না হওয়ায় কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
সোমবার কোচবিহারে উৎসব অডিটোরিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠন ও শিল্পদ্যোগীরাও উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকেই কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক উড়ান পরিষেবা চালুর ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানান। ওই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, “এটা (উড়ান চালু) ওদের (কেন্দ্রের) অধীনে বলেই সময় লাগছে। আমাদের কাজ তো করেই দিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “বিমানবন্দর তো আমরা করে দিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার এটা কাকে দিয়ে চালাবে, তারা নিশ্চয়ই একটা ভাল সংস্থার মাধ্যমে যাতে মানুষের নিরাপত্তা বজায় থাকবে তা অনুমোদন করলে হয়ে যাবে। তৈরিই আছে।”
ওই বৈঠকে পরিবহণ দফতরের কর্তা গোপালিকার কাছেও উড়ান চালুর ব্যাপারে বর্তমান অবস্থা নিয়েও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। গোপালিকা জানিয়ে দেন, একটি সংস্থাকে প্রাথমিক ভাবে ওই উড়ান পরিষেবা চালুর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওই সংস্থা তা পারেনি। নতুন করে সংস্থা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলবে। অন্য এক কর্তা জানান, এতে সময় লাগবে। বিষয়টি দফতরের আধিকারিকদের দেখারও নির্দেশ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, কোনটা কেন্দ্রের অধীন, কোনটা রাজ্যের অধীনে সেটাও বুঝতে হবে।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার বিমান বন্দরের বর্তমান পরিকাঠামোয় সহজেই ৯-১৮ আসনের উড়ান চালানো সম্ভব। কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলে ২৪ আসনের উড়ান চালু করা যেতে পারে। আগেও একাধিকবার কোচবিহার-কলকাতা উড়ান চলেছে। মাঝে গুহায়াটি-কোচবিহার-কলকাতা আকাশপথে জুড়তেও চেষ্টা হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে কোনও উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়নি। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কোচবিহার শুধু নয় ডুয়ার্স ও নিম্ন অসমের বিস্তীর্ণ এলাকার যাত্রী চাহিদা থাকলেও নিয়মিত উড়ান চলেনি।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য মানতে রাজি নয় বিজেপির নেতারা। কোচবিহার জেলা নেতা নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “পরিবহণ ব্যবস্থা রাজ্যের নিজস্ব ব্যাপার। রাজ্য বারবার ঘোষণা করলেও এতদিনে উড়ান চালু হয়নি। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে কেন্দ্রকে দায়ী করা হচ্ছে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “ওই পরিষেবা চালুতে ব্যর্থতার দায় কেন্দ্র, রাজ্য কেউ এড়াতে পারে না।”