পরামর্শ: কোর কমিটির বৈঠকে মমতা-পার্থ। তৃণমূল ভবনে।—নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচারে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষানলে পড়লেন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। জাকির মুর্শিদাবাদ থেকে জেতা বিধায়ক। সেখান থেকেই অবাধে পুলিশ-বিএসএফের মদতে বাংলাদেশে গরু পাচার হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদ করায় তাঁকে পাচারকারীরা খুনের হুমকি দিচ্ছে বলেও রঘুনাথগঞ্জ থানায় এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করেছেন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী।
এ দিন তৃণমূল ভবনে দলের কোর কমিটির বৈঠক বসেছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকেই বিষয়টি তোলেন। জাকিরকে দেখেই বলেন,‘‘তুমি বাড়াবাড়ি করছ। কোনও বিষয় থাকলে বলতেই পারো, কিন্তু দলের মধ্যে সেটা বলতে হবে। তুমি সংবাদমাধ্যমে কেন এসব বলেছ? দলের পর্যবেক্ষর শুভেন্দু অধিকারীকে জানিয়েছিলে?’’ এ কথা শুনে জাকির বলার চেষ্টা করেন যে পরিবহণ মন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছিলেন। সে সময় শুভেন্দু উঠে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন,‘‘আমাকে বলা হয়েছিল। আমি সংবাদমাধ্যমে এ সব বলতে নিষেধ করেছিলাম। তারপরেও তো বলা হয়েছে।’’ এর পর মুখ্যমন্ত্রী জাকিরকে সতর্ক করে দেন।
পুলিশ নবান্নে খবর পাঠিয়ে বলেছে, পাচার নিয়ে অভিযোগের পিছনে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষের ব্যবসায়িক বিবাদও থাকতে পারে। সম্প্রতি পলশন্ডায় একটি নতুন চালকল তৈরিকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদে বিবদমান দুই পক্ষের গোলমাল শুরু হয়েছিল। গরুর কারবারীদের সঙ্গে নেতাদের ‘ভাগাভাগি’ নিয়েও নানা খবর পুলিশ পেয়েছে। সবই মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছে। দলীয় মহল থেকেও এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন মনে করে, গরু পাচারের দায় রাজ্য প্রশাসনের নয়। বিএসএফের এ সব দেখার কথা। যদি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মদতে গরু পাচার চলে তা হলে রাজ্যের মন্ত্রী কেন নাক গলাবে? সেই কারণেই গরু পাচারের মতো বিবাদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।