গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার মূল লক্ষ্য, ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তী। সঙ্গে দলের শ্রমিক সংগঠনও।
বুধবার দলের বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী কড়া ধমক দেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা, বাসন্তীর বিধায়ক জয়ন্ত নস্করকে। একই সঙ্গে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র কাজকর্ম, বিশেষত এর রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনকে নিয়েও তাঁর উষ্মা প্রকাশ করে মমতা জানিয়ে দেন, কারও একক নেতৃত্বে সংগঠন চলবে না।
বেশ কিছুদিন ধরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সংবাদ শিরোনামে। দিন কয়েক আগে বাসন্তীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে এক স্কুলছাত্রের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুতে বিড়ম্বনা বেড়েছে শাসক দলের। দফায় দফায় অশান্ত এই সব এলাকার সংশ্লিষ্ট নেতাদের সতর্ক করেছেন মমতা নিজে। জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বৈঠক করে ধমকেছেন তাঁদের। কিন্তু গোলমাল থামেনি। এ দিন দলের প্রায় আড়াই হাজার কর্মীর সামনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই সব এলাকার নেতাদের নামোল্লেখ করে মমতার চরম হুঁশিয়ারি, ‘‘সওকত তোমার বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ আছে। তুমি, জয়ন্ত নস্কর বা গোবিন্দ নস্কর যা করছ, ঠিক করছ না। আর একবারও গোলমাল করলে পদ থেকে সরিয়ে দেব।’’
গুলিতে ছাত্রমৃত্যুর নিন্দা করলেও বাসন্তীর গোলমালকে অবশ্য দু’টি পাড়ার বিবাদ বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন মমতা। যদিও তাঁর কথায়, ‘‘দু’টো পাড়ার গোলমালে আমাদের লোকই বা জড়াবে কেন? বাসন্তী, ভাঙড়, ক্যানিংয়ে গোলমাল আর সহ্য করা হবে না।’’ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বারবার উঠে আসা বিভিন্ন এলাকা নিয়ে তিনি যে উদ্বিগ্ন, তা বোঝাতেই মমতা বলেন, ‘‘কয়েকটা সমস্যার জায়গা(ব্ল্যাক স্পট) রয়েছে। সেখানে ভুলভ্রান্তি হলে আমাদেরই শুধরে নিতে হবে।’’
এই সমস্যা মেটাতে তাঁর নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশ যে অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে, তেমন বার্তাও দেন মমতা। জেলা পর্যবেক্ষকদের নির্দেশ অমান্য করা মানে যে তাঁকেই অমান্য করা, তাও আবার স্পষ্ট করেছেন তিনি। নেত্রীর কথায়, ‘‘জেলার পর্যবেক্ষকরা আমার সঙ্গে আলোচনা করেই সব কিছু করে। ওদের কথা শুনে চলতে হবে।’’
মমতা বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও বিভিন্ন সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র একাধিক সংগঠন রয়েছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগও প্রকাশ্যে আসছে। এ দিন শ্রমিক সংগঠনের সভানেত্রী দোলাকে ফের সে বিষয়ে সতর্ক করেন নেত্রী। প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই সংগঠনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘এখন থেকে প্রদীপদা, দোলা নিয়মিত তৃণমূল ভবনে বসবেন। কোনও অসুবিধা হলে বক্সী, পার্থদা, শোভনদেব’দার সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন। কারও একক নেতৃত্ব চলবে না, তা বলে দিচ্ছি।’’