কলকাতায় এসে বিভ্রাটের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান

বুধবার পটনা থেকে কলকাতা ফেরার পথে সমস্যায় পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর বিমান। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় নামার সময় ইন্ডিগোর ওই বিমান লাইনে আট নম্বরে ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:২৭
Share:

বুধবার পটনা থেকে কলকাতা ফেরার পথে সমস্যায় পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর বিমান। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় নামার সময় ইন্ডিগোর ওই বিমান লাইনে আট নম্বরে ছিল। অর্থাৎ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ওই বিমানচালককে জানায় যে, একে একে সাতটি বিমান নামার পরে তবেই নামতে পারবে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান। এই অবস্থায় প্রায় আধ ঘণ্টা আকাশে চক্কর কাটে বিমানটি। শেষ পর্যন্ত রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করে।

Advertisement

বিমান থেকে নেমে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেন, চক্কর কাটার সময় বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছিল। গোটা ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বিমানে থাকা সত্ত্বেও কেন এমন ঘটনা ঘটল তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে বিধাননগর পুলিশ ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন পটনা থেকে কলকাতার মাথায় এসে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ইন্ডিগোর পাইলট এটিসি-কে ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠান। বিমানবন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও বিমান নির্দিষ্ট বিমানবন্দরে যখন নামতে আসে, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিয়ম অনুসারে তখন দু’টি বিকল্প বিমানবন্দরে পৌঁছনোর মতো জ্বালানি তাকে রাখতেই হয়। যার অর্থ, এ দিন ইন্ডিগোর বিমানটির কাছে বিকল্প বিমানবন্দর রাঁচি ও ভুবনেশ্বরে যাওয়ার মতো জ্বালানি থাকার কথা। প্রকৃতপক্ষে তা ছিলও।’’ তা হলে ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠানোর কারণ কী? ওই বিমান কর্তা জানান, এর অর্থ হলো, কলকাতায় অপেক্ষা করার জন্য বিমানটির হাতে ৭ মিনিট সময় রয়েছে। তার পরে সে অনায়াসে রাঁচী উড়ে যেতে পারে। ফলে এটা তেমন আপৎকালীন কোনও পরিস্থিতি নয়। কিন্তু কোনও পাইলট যদি জানান যে তাঁর ‘ফুয়েল শর্টেজ’ আছে, তা হলে বুঝতে হবে, বিমানটির জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছে। তখন তাকে অন্য বিমানের আগেই নামার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু এ দিন ইন্ডিগোর পাইলট তেমন কিছু জানাননি। তা ছাড়া, বিমানটিতে পটনায় জ্বালানি ভরাও হয়েছিল।

Advertisement

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় একই সময় শহরে আসা তিনটি বিমান ‘লো অন ফুয়েল’ সঙ্কেত পাঠায়। ইন্ডিগোর ওই বিমানটি ছাড়াও ছিল আগরতলা থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এবং বেঙ্গালুরু থেকে আসা স্পাইসজেটের বিমান। বিমানবন্দরের এক অফিসার বলেন, ‘‘ইন্ডিগো যখন ‘লো অন ফুয়েল’ কল করে তখন তার আগে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে ইন্ডিগো-কে আগে নামাব কিনা। এয়ার ইন্ডিয়া জানায় তারও ‘লো অন ফুয়েল’।’’ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরে দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স মোতায়েন রাখা হয়।

ফিরহাদের অবশ্য দাবি, ‘‘এটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। পাইলট বারবার জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছে জানানো সত্ত্বেও বিমানটি আধ ঘণ্টার ওপর আকাশে চক্কর কাটে। ক্র্যাশ ল্যান্ডিং হবে বলে পুরো ব্যবস্থা করা ছিল। এর থেকেই ষড়যন্ত্রটা পরিষ্কার হয়ে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন