বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার। নিজস্ব চিত্র।
‘‘বাংলার গায়ে হাত দিয়ে দেখো। বুঝবে বাংলা কী। এখানে আমার বাঘের বাচ্চারা বসে আছে।’’
তর্জনী তুলে এই ভাষাতেই মঙ্গলবার বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগরিক পঞ্জী নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শুরু বিরোধকে এদিন কার্যত সংঘাতের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি থাকবে না। তোমরা থাকবে। সকলের নাম লেখা থাকবে। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব।’’
সেই ‘বুঝে নেওয়া’ কী রকম হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়ে দলনেত্রীর বক্তৃতার আগেই যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলনেত্রী অনুমোদন দিলে পাঁচ মিনিটও লাগবে না, ফুটো কলসির কত দম, ছাত্র যুবরাই তা ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেবে।’’
দিন কুড়ি আগে মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির সামনে দলীয় সভায় নাগরিক পঞ্জীর কথা ঘোষণা করে গিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সেখানেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখন বলছে, এখানেও (নাগরিক পঞ্জী) চালু করতে হবে। হরিদাস সব! কে চালু করবে? এত সহজ নয়।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বলছে, অসম থেকে তাড়িয়েছি, এবার বাংলা থেকে তাড়াব। আমরা বলেছি, এখানে একবার হাত দিয়ে দেখাও! এখানে ও সব চালু করার আগে তোমরাই বিদায় হয়ে যাবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘অসম থেকে তাড়ালেও আমরা প্রতিবাদ করব। কোনও ভারতবাসীকে ভারত থেকে তাড়ালে আমরা প্রতিবাদ করবই।’’ তাংর মন্তব্য, ‘‘ইন্দিরা গাঁধীর জরুরি অবস্থার কথা বলা হয়। এ তো সেই জরুরি অবস্থার ঠাকুরদাদা!’’
বিজেপির পাশাপাশি আরএসএসেরও কড়া সমালোচনা করেন মমতা। তাঁর দাবি, আগের আরএসএস আর এখনকার আরএসএস এক নয়। তিনি বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, সারা পৃথিবীতে ৩৬ টা জায়গায় সংগঠন আছে। বিদেশের টাকা, চুরির টাকা, নোটবাতিলের টাকা, তছরূপ করা হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা কামাচ্ছে। এরা না কি হিন্দু সংগঠন। হিন্দু হোক বা মুসলিম, আমরা সন্ত্রাসবাদী কোনও সংগঠনে বিশ্বাস করি না।’’
মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের জবাবে বিজেপির সর্ববারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের দাবি, ‘‘বাংলায়ও নাগরিক পঞ্জী চালু হবে। দেখা যাবে, কে বাঘের বাচ্চা আর কে শিয়ালের বাচ্চা।’’