বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনছে বিরোধীরা। দলত্যাগীদের প্যাঁচে ফেলতে জারি হয়েছে হুইপ। হাওয়া গোলমেলে দেখেই ছুটির বন্দোবস্ত হয়েছে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার জন্য। কারণ দেখানো হয়েছে, চিকিৎসার জন্য কলকাতার বাইরে যেতে হবে। অথচ সেই মানসবাবুকেই বৃহস্পতিবার দেখা গেল, বসে আছেন বালেশ্বরে তৃণমূলের মঞ্চে! সুব্রত বক্সী, শুভেন্দু অধিকারীদের পাশে।
এর আগে ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে ছিলেন। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র সবংয়েও প্রকাশ্য সভায় হাজির ছিলেন। তখন তৃণমূল কর্মী জয়দেব জানা খুনের ঘটনায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে তাঁর নামে। অথচ শাসক দলের মঞ্চে পুলিশ তাঁকে দেখতেই পায়নি! শেষমেশ সেই খুনের ঘটনার চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ থাকায় আদালতেও অব্যাহতি পেয়ে গিয়েছেন সবংয়ের বিধায়ক। এ বার প্রতিবেশী রাজ্যের মঞ্চে উপস্থিতির জেরে বিরোধীদের প্রশ্ন—চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়ে দলের সভা করা, এ আবার কেমন নৈতিকতা?
প্রশ্নের মুখে মানসবাবু জানাচ্ছেন, প্রখ্যাত এক চিকিৎসককে দেখাতে হায়দরাবাদ যাওয়ার সূচি তাঁর বহাল আছে। তার জন্য পরীক্ষা করিয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করাচ্ছেন। কিন্তু হায়দরাবাদের হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তা বালেশ্বর ঘুরে গেল কেন? মানসবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘চিকিৎসক আমাকে ৯ ডিসেম্বর তারিখ দিয়েছিলেন। কিন্তু হংকংয়ে থাকায় উনি তারিখ পাল্টে বলেছেন ১০-১১ তারিখ নাগাদ যেতে। তাই একটু সময় পেয়েছি।’’ শাসক শিবিরেরই একাংশ বলছে, চিকিৎসক তারিখ বদলানোর পরে মানসবাবু চুপচাপ কলকাতায় থাকতে পারতেন! নোট বাতিলের বিরুদ্ধে বালেশ্বরের সভায় মুখ দেখিয়েই গোলমালটা করে ফেললেন!
এমন সমাবেশে হাজির হওয়ায় বিরোধীরা প্রশ্ন তুললেও মানসবাবু অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর মহিমা কীর্তন থেকে বিরত হচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস কালিদাসের মতো কাজ করছে! মমতা যখন মোদীর বিরুদ্ধে লড়ছেন, দিল্লিতে রাহুল গাঁধীরা তাঁকে সমর্থন করছেন, তখন সেই লড়াইয়ের পাশে না দাঁড়িয়ে আব্দুল মান্নানেরা বিধানসভায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে বসে আছেন!’’