—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন একই সঙ্গে হবে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটও। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এ কথা ঘোষণা করেছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভোট-নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে বলেন, ‘‘এ বারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যায় ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি। প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারেরাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষের বেশি প্রবাসী ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন।’’
নাসিরউদ্দিন জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং গণভোট একই বুথে পৃথক ব্যালটে হবে। রাত থেকেই শুরু হবে গণনা। গত অগস্টে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছিল বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে সে সময় বলা হয়েছিল, ডিসেম্বরে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হতে পারে। এর পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের সঙ্গেই জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হবে। প্রধান উপদেষ্টার ওই ঘোষণার পরে সে দেশের নির্বাচন কমিশনও ভিন্ন ব্যালটে একই সঙ্গে দু’টি ভোট করার কথা জানিয়েছিল।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎপর্বের শেষে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন বলেছিলেন, ‘‘এই সপ্তাহেই তফসিল (নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি) ঘোষণা হয়ে যাবে।’’ প্রসঙ্গত, গত ৫ অগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, আগামী বছর রমজান শুরুর আগেই ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের নির্বাচন করতে চান। তিনি বলেন, ‘‘২০২৬ সালের পবিত্র রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব।’’ তার পরেই দিনই ইউনূস চিঠি পাঠালে ভোটার তালিকা সংশোধন ও আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু করেছিল কমিশন। সে কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
গত ৫ অগস্ট ইউনূস ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ও পাঠ করেছিলেন। ২৮ দফার ওই ঘোষণাপত্র হল ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের একটি দলিল, যার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মুজিবুর রহমান এবং হাসিনার আমলে ‘আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের’ পাশাপাশি ওই সনদে সমালোচনা করা হয়েছে দুই সেনাশাসক, জিয়াউর রহমান (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) এবং হুসেন মহম্মদ এরশাদের (জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা) জমানারও। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ হিসাবে ঘোষণার প্রস্তাবও রয়েছে ওই সনদে। তা নিয়েই হবে গণভোট। সিইসি জানিয়েছেন, দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে নিবন্ধিত ৫৬টি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। ফলে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।