হাওড়া স্টেশনে অপেক্ষারত যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসা করাতে চেন্নাই যাওয়ার কথা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় সপরিবার হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন নদিয়ার রাধাবাজারের বাসিন্দা সীমা মল্লিক। ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে। কিন্তু সেই ট্রেন এখনও ছাড়েনি। সারা রাত ধরে হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে বসে রয়েছেন তাঁরা।
শুধু সীমারাই নন, দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেনের গন্ডগোলের জেরে বিপাকে পড়েছেন শয়ে শয়ে যাত্রী। সীমা বলেন, ‘‘স্ত্রীরোগজনিত অসুস্থতার জন্য চেন্নাই যাওয়ার কথা ছিল। স্বামী, ছেলেমেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ট্রেনের এই অবস্থা। বৃহস্পতিবার সকালেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে। সেটা আদৌ সম্ভব হবে কি না, জানি না।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সীমার স্বামী গৌরবও। তিনি বলেন, ‘‘এরা কী করছে, জানি না। কত লোকের কত কাজ রয়েছে! এরা কি সাধারণ মানুষকে নিয়ে একটুও ভাবে না?’’
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের গুরুত্বপূর্ণ প্রান্তিক স্টেশন হিসাবে সাঁতরাগাছিকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত ৩০ এপ্রিল থেকে ওই স্টেশনের রেল ইয়ার্ডে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। চার এবং পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রেললাইনকে কেন্দ্র করে ওই কর্মকাণ্ড চলছে। ওই কাজের জন্য গত ৩০ এপ্রিল থেকে দুশোটিরও বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বুধবারও বাতিল করা হয়েছে হাওড়া-দিঘা, দিঘা-হাওড়া এবং পুরুলিয়া এক্সপ্রেস। সময়সূচি বদল করা হয়েছে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনেরও।
শুধু তা-ই নয়, যাত্রীদের অভিযোগ, টাইম টেবল না-মানা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দীর্ঘ দিনের সমস্যা। হাজার ‘দাওয়াই’তেও সেই সমস্যার সমাধান হয়নি! এক দিন ঠিক হয় তো পরের দিনই সেই একই ছবি।
যদিও রেলের দাবি, আগের চেয়ে ট্রেন পরিষেবা কিছু স্বাভাবিক হয়েছে বুধবার। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওম প্রকাশ চরণ বলেন, ‘‘একটা সমস্যা হয়েছে। তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে আগের থেকে তা স্বাভাবিক হয়েছে অনেকটাই।’’