এনএমসি: প্রশ্নে গণতন্ত্রই

এত দিন নিয়ম ছিল, এমসিআই-য়ে রাজ্য থেকে তিন জন চিকিৎসক সদস্য থাকবেন। এক জন নির্বাচিত, এক জন রাজ্যের মাধ্যমে মনোনীত এবং এক জন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মনোনীত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) গড়ে আসলে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থাকে কেন্দ্রীয় সরকার নিজের কব্জায় নিতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলল ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র (এমসিআই) একাংশ এবং চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠন। স্বচ্ছতার কথা বলে এমসিআই ভেঙে দেওয়া হলেও এনএমসি হলে আখেরে অস্বচ্ছতা আরও বাড়বে বলেই তাদের আশঙ্কা।

Advertisement

এত দিন নিয়ম ছিল, এমসিআই-য়ে রাজ্য থেকে তিন জন চিকিৎসক সদস্য থাকবেন। এক জন নির্বাচিত, এক জন রাজ্যের মাধ্যমে মনোনীত এবং এক জন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মনোনীত। যেমন পশ্চিমবঙ্গ থেকে এখন রয়েছেন যথাক্রমে নির্মল মাজি, সুদীপ্ত রায় এবং প্লাবন মুখোপাধ্যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, এনএমসি কার্যকর হলে তাতে যে ২০ বা ২৫ সদস্য থাকবেন তাঁরা রাজ্যের সদস্য নন। বর্তমানে এমসিআইয়ের এথিকাল কমিটির সদস্য সুদীপ্ত রায়ের কথায়, ‘‘গণতন্ত্র বলে আর কিছু থাকবে না মেডিক্যাল শিক্ষায়। বেশ কিছু নন-মেডিক্যাল সদস্যও থাকবে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

তবে কমিশনের অন্তর্গত একটি ৬৪ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গড়ার প্রস্তাব রয়েছে নতুন বিল-এ। সেখানে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির এক জন করে প্রতিনিধি থাকার কথা। রাজ্যের যে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সবচেয়ে বেশি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে তাদের এক জন করে সদস্যেরও পরিষদে থাকার কথা।

Advertisement

তা হলে কেন মনে করা হচ্ছে নতুন কমিশনে রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব থাকবে না? সুদীপ্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘প্রস্তাবিত ন্যাশনাল কমিশন এবং তার উপদেষ্টা পরিষদ—দু’টোর ক্ষমতাকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। উপদেষ্টা পরিষদ শুধু প্রস্তাব দিতে পারবে, সিদ্ধান্ত নিতে বা চূড়ান্ত নীতি নির্ধারণ করতে পারবে না।’’

একই বক্তব্য রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজিরও। তাঁর কথাতেও, ‘‘স্বাস্থ্য হল কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের যৌথ দায়িত্বের বিষয়। কিন্তু এমসিআই ভেঙে মেডিক্যাল শিক্ষার উপর কেন্দ্র শুধু তার নিজের ক্ষমতা কায়েম করতে চাইছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ৪০ শতাংশ আসনে ভর্তির ফি কমিশন ঠিক করবে বলে শোনা যাচ্ছে। এতে দুর্নীতি বাড়বে।’’

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন কাজ শুরু করলেও অবশ্য রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলগুলি লুপ্ত হবে না। তবে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে কোনও মামলায় অভিযোগকারী সন্তুষ্ট না-হলে এত দিন এমসিআইয়ের দ্বারস্থ হতেন। নতুন ব্যবস্থায় কী হবে? স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, এনএমসি-তে আবেদন করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন