প্রতীকী ছবি।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির পরীক্ষা ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নিট) নিয়ে রাজ্যর অভিযোগ অনেক। এমনকি তারা যে আর নিটের আওতায় থাকতে চায় না, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই অবস্থায় নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে ভর্তি-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের হয়রানি নিয়ে।
প্রবেশিকায় উত্তীর্ণদের মাত্র সাত শতাংশ কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন। অথচ সকলকেই যোগ দিতে হবে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্ব অর্থাৎ প্রি-কাউন্সেলিংয়ে। এবং তার জন্য দিতে হবে ফি। এই নিয়েই ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। সর্বভারতীয় নিটের এটা দ্বিতীয় বছর। প্রশ্ন উঠছে, হয়রানি কমাতে এক বছরের অভিজ্ঞতার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেননি কেন?
এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফল বেরিয়েছে সোমবার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ বছর পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৫৫ হাজার ৮৮৮ জন পড়ুয়া নিটে বসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩২ হাজার ৭৪১ জন। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ১৩টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসন-সংখ্যা ২১৫০। জোকা ইএসআইয়ের মতো কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ে চলা মেডিক্যাল কলেজে নিট-উত্তীর্ণদের জন্য বরাদ্দ আসন ৫০টি এবং রাজ্যের চারটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে নিট-উত্তীর্ণদের জন্য বরাদ্দ ২০০ আসন। অর্থাৎ রাজ্যে মোট ২৪০০ আসন রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, সুযোগ তো পাবেন মাত্র ২৪০০ জন পড়ুয়া। তা হলে কেন প্রি-কাউন্সেলিং পর্বে বাকি ৩০৩৪১ জন হয়রানির শিকার হবেন কেন? নিট-উত্তীর্ণ প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে প্রি-কাউন্সেলিং ফি হিসেবে এক হাজার টাকা ই-পেমেন্ট করতে হয় স্বাস্থ্য দফতরে। অতঃপর নির্দিষ্ট মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করাতে হয়। তার পরে স্থান অনুযায়ী তৈরি হয় ভর্তির সুযোগ। কিন্তু রাজ্যের পৃথক মেধা-তালিকা প্রকাশ করলে এই ধরনের হয়রানি অনায়াসেই এড়ানো যায় বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ। মধ্যপ্রদেশ, অসমের মতো অনেক রাজ্য পৃথক মেধা-তালিকা প্রকাশ করে। তাই জটিলতা তৈরি হয় না।
তামিলনাড়ুর মতো কিছু রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করে আসন-সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এ বছর তামিলনাড়ুর ৩৫ হাজার ৭৩২ জন পরীক্ষার্থী নিট পাশ করেছেন। এখন ওই রাজ্যে ২২টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। প্রতিটি কলেজে আসন আছে ২৫০টি। আরও প্রায় ৩৫০ আসন বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আসন বৃদ্ধির উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
গত বছরেও প্রি-কাউন্সেলিংয়ের পদ্ধতি নিয়ে সরব হয়েছিল কিছু ছাত্র সংগঠন। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার কাছে এই নিয়ে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়। কিন্তু বছর ঘুরে যাওয়া সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত বদল হয়নি। তাই ফের রাজ্যের আলাদা মেধা-তালিকা প্রকাশের দাবি উঠছে। যে-সব পরীক্ষার্থী এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে ভর্তির আর্জি জানাচ্ছেন, তাঁদের তথ্য ঠিক মতো যাচাইয়ের দাবি তুলছে রাজ্যের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। ৭ জুন, বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরতে চায় তারা।